আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

পৃষ্ঠা - ৮৭৭১
[ হিজরি ২৫১ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এর পর ২৫১ হিজরী শুরু হল।

মুস্তাইন, বুগা ও ওছিফ তিন জন বাগরে তুর্কী কে হত্যার পরিকল্পনা করেন। মুতাওয়াক্কীলের হত্যাকারীদের বড় নেতা ছিলেন উনি। উনার বিস্তৃত জমিদারীর ছিল। অনেক কর্মচারী। পরিকল্পনা মত তাকে হত্যা করে। তারপর তার কাতেবের ঘর লুট করে। বাগের তুর্কীর সমস্ত ধন সম্পদ লুট করে।

এর পর খলিফা দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে সামারা থেকে বাগদাদে চলে আসেন। তিনি চলে যাওয়ায় প্রশাসনে বিশৃঙখলা সৃষ্টি হয়। এটা মহরম মাসের ঘটনা। খলিফা বাগদাদে পৌছে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের বাড়িতে অবস্থান নেন।

এই বছরে বাগদাদ ও সামারাতে সৈন্যদের মধ্যে বড় ফেতনা সৃষ্টি হয়। সামারাবাসী মু’তায্যের হাতে বায়াত গ্রহন করার দাওয়াত দেয়। ওদিকে বাগদাদের অধিবাসীরা মুস্তাইনের খেলাফাতের উপর অটল থাকে।

মু’তায্য ও তার ভাই মুআইয়্যাদ কে জেলখানা থেকে বের করে সামারাবাসী মু’তায্যের হাতে বায়াত গ্রহন করে। এবং বাইতুল মাল দখল করে নেয়। বাতুলমালে তখন পাচ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা ছিল। আর মুস্তাইনের মায়ের দশ লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা এবং তার ছেলে আব্বাস ইবনে মুস্তাইনের ছয় লক্ষ স্বর্ণমুদ্রা জমা ছিল। এ দিয়ে সামারায় মু’তায্যের ক্ষমতা মজবুত হয়।

মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরকে বাগদাদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শহরের দুই প্রচির ও পরিখাকে মেরামতের নির্দেশ দেন মুস্তাইন। এ জন্য তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার দিনার বরাদ্ধ করেন। আর শহর হেফাজতের জন্য সব গেটে পাহারাদার নিযুক্ত করেন। প্রাচিরসমূহের উপর পাঁচটি মিনজানিক স্থাপন করেন। যার একটা অনেক বড় ছিল। যেটার নাম ছিল গযবান (রাগন্বিত / ক্ষিপ্ত)।
[سَنَةُ إِحْدَى وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ إِحْدَى وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِيهَا اجْتَمَعَ رَأْيُ الْمُسْتَعِينِ وَبُغَا الصَّغِيرِ وَوَصِيفٍ عَلَى قَتْلِ بَاغِرَ التُّرْكِيِّ وَكَانَ مِنَ الْقُوَّادِ الْكِبَارِ الَّذِينَ بَاشَرُوا قَتْلَ الْمُتَوَكِّلِ، وَقَدِ اتَّسَعَ إِقْطَاعُهُ، وَكَثُرَتْ أَعْمَالُهُ فَقُتِلَ وَنُهِبَتْ دَارُ كَاتِبِهِ دَلِيلِ بْنِ يَعْقُوبَ النَّصْرَانِيِّ، وَنُهِبَتْ أَمْوَالُهُ وَحَوَاصِلُهُ، فَرَكِبَ الْخَلِيفَةُ فِي حَرَّاقَةِ مَنْ سَامَرَّا إِلَى بَغْدَادَ ; فَاضْطَرَبَتِ الْأُمُورُ بِسَبَبِ خُرُوجِهِ إِلَيْهَا، وَذَلِكَ فِي خَامِسِ الْمُحَرَّمِ، فَنَزَلَ الْخَلِيفَةُ دَارَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ. وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ وَقَعَتْ فِتْنَةٌ شَنْعَاءُ بَيْنَ جُنْدِ بَغْدَادَ وَجُنْدِ سَامَرَّا، وَدَعَا أَهْلُ سَامَرَّا إِلَى بَيْعَةِ الْمُعْتَزِّ، وَاسْتَقَرَّ أَمْرُ أَهْلِ بَغْدَادَ عَلَى الْمُسْتَعِينِ، وَأُخْرِجَ الْمُعْتَزُّ وَأَخُوهُ الْمُؤَيَّدُ مِنَ السِّجْنِ فَبَايَعَ أَهْلُ سَامَرَّا الْمُعْتَزَّ، وَاسْتَحْوَذَ عَلَى حَوَاصِلَ بَيْتِ الْمَالِ بِهَا ; فَإِذَا بِهَا خَمْسُمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَفِي خِزَانَةِ أَمِّ الْمُسْتَعِينِ أَلْفُ أَلْفُ دِينَارٍ، وَفِي حَوَاصِلِ الْعَبَّاسِ ابْنِ الْمُسْتَعِينِ سِتُّمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَاسْتَفْحَلَ أَمْرُ الْمُعْتَزِّ بِسَامَرَّا، وَأَمَرَ الْمُسْتَعِينُ لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ أَنْ يُحَصِّنَ بَغْدَادَ وَيَعْمَلَ فِي السُّورَيْنِ وَالْخَنْدَقِ، وَغَرِمَ عَلَى ذَلِكَ ثَلَاثَمِائَةِ أَلْفِ دِينَارٍ وَثَلَاثِينَ أَلْفَ دِينَارٍ، وَوَكَّلَ بِكُلِّ بَابٍ أَمِيرًا يَحْفَظُهُ، وَنَصَبَ عَلَى السُّورِ خَمْسَةَ مَجَانِيقَ، مِنْهَا وَاحِدٌ كَبِيرٌ جِدًّا
পৃষ্ঠা - ৮৭৭২
এবং ছয়টা পাথর নিক্ষেপ করার যন্ত্র (প্রচিন কালের বিশেষ যুদ্ধাস্ত্র) স্থাপন করেন।যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষার সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করেন। এবং জনবল তৈরি করতে থকেন। আর শহরের চারপাশের সেতু ভেঙ্গে দেন। যাতে শত্রুবাহিনী শহরে পৌছাতে না পারে।

এ সময় মু’তায্য মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের কাছে চিঠি পাঠান এবং তার সাথে মিলিত হতে বলেন। চিঠিতে তার পিতা মুতাওয়াক্কিল তাদের থেকে যে ওয়াদা অঙ্গিকার নিয়েছিল তা স্বরণ করান। তা হল আমার পর মু’তায্য খলিফা হবে। কিন্তু মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ এদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করেন নাই। বরং তার বিপরিত বিভিন্ন অযৌক্তিক অযুহাত খাড়া করেন। যা এখানে আলোচনা করলে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে।

মুস্তাইন ও মু’তায্য প্রত্যেকেই মুসা ইবনে বুগা কাবীরের কাছে চিঠি লিখল। প্রত্যেকেই তার নিজের সাথে মিলিত হওয়ার আহবান জানল। ঐ সময় তিনি শামের এক এলাকায় ছিলেন, হিমসের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। মু’তায্য তার কাছে কিছু ঝান্ড পাঠাল তার সাথি সঙ্গির মধ্যে যাকে ইচ্ছা দেওয়ার জন্য। আর মুস্তাইন লিখল যে, সে বাগদাদে তার কাছে আসলে উনি তাকে তার সহকারীর পদে নিয়োগ দিবে।

কিন্তু মুস ইবনে বুগা কবীর দ্রুত সফর করে সামাররায় চলে আসেন। এবং সে মুস্তাইনের বিপক্ষ হয়ে মু’তায্যের সাথে মিলে যান। অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ বুগা ছগীর বাগদাদে তার পিতার কাছ থেকে পালায়ে সামাররায় এসে মু’তায্যের সাথে মিলিত হন। উনি ছাড়াও আরো অনেক আমীর ও তুর্কী অধিবাসী মু’তায্যের সাথে মিলিত হয়।

মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের নেতৃত্বে একটি বাহিনী মুস্তাইনের সাথে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানোর সিন্ধান্ত নেন। সেজন্য সৈন্য-সামান্ত প্রস্তুত করে দেন। আবূ আহমাদ পঞ্চাশ হাজার তুর্কী ও অন্যান্য সৈন্য নিয়ে বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওনা হন। উকবারা নামক স্থানে পৌছে জুমার নামায পড়েন এবং তার ভাই মু’তায্যের জন্য দুআ করেন। অতঃপর তিনি সফরের সাত তারিখ রবিবার রাতে বাগদাদে পৌছেন। ওখানেও এক বড় বাহিনীও তার সাথে মিলিত হয়। ঐস্থানে আবূ আহমাদের সৈন্য বাহিনীর এক লোক যার নাম বাযেনজানা কিছু কবিতা আবৃতি করেন।
يُقَالُ لَهُ: الْغَضْبَانُ. وَسِتَّ عَرَّادَاتٍ، وَأَعَدُّوا آلَاتِ الْحَرْبِ وَالْحِصَارِ وَالْعُدَدَ وَقُطِعَتِ الْقَنَاطِرُ مِنْ كُلِّ نَاحِيَةٍ ; لِئَلَّا يَصِلَ الْجَيْشُ إِلَيْهِمْ. وَكَتَبَ الْمُعْتَزُّ إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ يَدْعُوهُ إِلَى الدُّخُولِ مَعَهُ فِي أَمْرِهِ، وَيُذَكِّرُهُ مَا كَانَ أَخَذَهُ عَلَيْهِمْ أَبُوهُ الْمُتَوَكِّلُ مِنَ الْعُهُودِ وَالْمَوَاثِيقِ أَنْ تَكُونَ الْخِلَافَةُ بَعْدَ الْمُنْتَصِرِ لَهُ، فَلَمْ يَلْتَفِتْ إِلَيْهِ بَلْ رَدَّ عَلَيْهِ، وَاحْتَجَّ بِحُجَجٍ يَطُولُ ذِكْرُهَا. وَكَتَبَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنَ الْمُسْتَعِينِ وَالْمُعْتَزِّ إِلَى مُوسَى بْنِ بُغَا الْكَبِيرِ وَهُوَ مُقِيمٌ بِأَطْرَافِ الشَّامِ لِحَرْبِ أَهْلِ حِمْصَ يَدْعُوهُ إِلَى نَفْسِهِ، وَبَعَثَ إِلَيْهِ بِأَلْوِيَةٍ يَعْقِدُهَا لِمَنِ اخْتَارَ مِنْ أَصْحَابِهِ، وَكَتَبَ إِلَيْهِ الْمُسْتَعِينُ يَأْمُرُهُ بِالْمَسِيرِ إِلَيْهِ إِلَى بَغْدَادَ وَيَأْمُرُهُ أَنْ يَسْتَنِيبَ فِي عَمَلِهِ، فَرَكِبَ مُسْرِعًا فَسَارَ إِلَى سَامَرَّا فَكَانَ مَعَ الْمُعْتَزِّ عَلَى الْمُسْتَعِينِ، وَكَذَلِكَ هَرَبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُغَا الصَّغِيرِ مِنْ عِنْدِ أَبِيهِ، مِنْ بَغْدَادَ إِلَى سَامَرَّا، وَكَذَلِكَ غَيْرُهُ مِنَ الْأُمَرَاءِ وَالْأَتْرَاكِ. وَعَقَدَ الْمُعْتَزُّ لِأَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ عَلَى حَرْبِ الْمُسْتَعِينِ، وَجَهَّزَ مَعَهُ جَيْشًا لِذَلِكَ، فَسَارَ فِي خَمْسَةِ آلَافٍ مِنَ الْأَتْرَاكِ وَغَيْرِهِمْ نَحْوَ بَغْدَادَ وَصَلَّى بِعُكْبَرَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَدَعَا لِأَخِيهِ الْمُعْتَزِّ، ثُمَّ وَصَلَ إِلَى بَغْدَادَ لَيْلَةَ الْأَحَدِ لِسَبْعٍ خَلَوْنَ مِنْ صَفَرٍ فَاجْتَمَعَتِ الْعَسَاكِرُ هُنَالِكَ، وَقَدْ قَالَ رَجُلٌ يُقَالُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৩
হে তাহেরের বংশধর আল্লাহর সৈন্য বহিনী তোমাদের কাছে এসেছে এদের ভয় কর।    কারণ মৃত্যুকে তারা ভয় করে না।
এই সৈন্য বাহিনীর মোকাবেলা কর না। যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবূ আহমাদ।    যিনি ভালো বন্ধু ও বড় সাহয্যকারী

তারপরে উভয় গ্রুফের মাঝে ভিষণ যুদ্ধ চলতে লাগল। অনেক ভয়ংকার অবস্থা সৃষ্টি হয়। যা ইবনে জারির  তার প্রশিদ্ধ কিতাব তারিখে তাবারিতে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

অতঃপর মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের সাহায্যের জন্য মূসা ইবনে আশনানের নেতৃত্বে  তিন হাজার সৈন্য পাঠান। তারা রবিউল আউয়াল মাসের শেষ দিন রাতে গিয়ে পৌছল। তারা সেখানে গিয়ে শহরের পশ্চিম পাশে বাবে কুতরাব্বুল (শহরে প্রবেশের একটা গেটের নাম) এর সামনে অবস্থান নিল। আর আবূ আহমাদ ও তার সঙ্গীগণ বাবে শাম্মাসিয়া (শহরের আরেকটি গেট) এর সামনে অবস্থান নিল। এ সময় তুমুল বেগে লড়াই চলছিল। বহু মানুষ মরতে লাগল।

যুদ্ধের অবস্থা বর্ণনা করার সময় ইবনে যারির লেখেন : মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের চিঠি লিখল। চিঠিতে বাগদাদবাসীদের সাথে লাড়ায়ের ক্ষেত্রে অবহেলার উপর ভাইকে তিরষ্কার করেন। চিঠির জবাবে আহমাদ নিচের কবিতাগুলো লিখল।

আমাদের কাছে মৃত্যু আসার একটাই রাস্তা  ۞  যামানা কখনো আমাদের অনুকুলে কখনো আবার প্রতিকুলে যায়।
আমাদের দিনগুলো লোকের জন্য শিক্ষনীয় থাকবে  ۞  যার কিছু বিপদ সকালের আসে কিছু রাতে।
যার কিছু মুসিবত এমন যা বাচ্চাকে বুড়ো বানায়  ۞  আর কিছু এমন যে কারণে এক বন্ধু অপর বন্ধুকে ফেলে রেখে যায়।
অনেক প্রশস্ত প্রাচির যার চূড়া এত উচু  ۞  আমাদের নজর সে পর্যন্ত পৌছে না এবং এক গভীর সমুদ্রও আছে।
ধংশকারী যুদ্ধ এবং প্রস্তুতকৃত এক তলোয়ার  ۞  বড় ভয়ংকার ও মজবুত দুর্গ
لَهُ: بَاذِنْجَانَةُ. كَانَ فِي عَسْكَرِ أَبِي أَحْمَدَ: يَا بَنِي طَاهِرٍ أَتَتْكُمْ جُنُودُ اللَّهِ ... وَالْمَوْتُ بَيْنَهَا مَنْثُورُ وَجُيُوشٌ أَمَامَهُنَّ أَبُو أَحْ ... مَدَ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ ثُمَّ جَرَتْ بَيْنَهُمَا حُرُوبٌ طَوِيلَةٌ وَفِتَنٌ مَهُولَةٌ جِدًّا قَدْ ذَكَرَهَا ابْنُ جَرِيرٍ مُطَوَّلَةً ثُمَّ بَعَثَ الْمُعْتَزُّ مَعَ مُوسَى بْنِ أَشْنَاسَ ثَلَاثَةَ آلَافٍ مَدَدًا لِأَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ، فَوَصَلُوا لِلَيْلَةٍ بَقِيَتْ مِنْ رَبِيعٍ الْأَوَّلِ، فَوَقَفُوا فِي الْجَانِبِ الْغَرْبِيِّ عِنْدَ بَابِ قُطْرَبُّلَ، وَأَبُو أَحْمَدَ وَأَصْحَابُهُ عَلَى بَابِ الشَّمَّاسِيَّةِ، وَالْحَرْبُ مُسْتَعِرَةٌ، وَالْقِتَالُ كَثِيرٌ، وَالْقَتْلُ وَاقِعٌ. قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: وَذُكِرَ أَنَّ الْمُعْتَزَّ كَتَبَ إِلَى أَخِيهِ أَبِي أَحْمَدَ يَلُومُهُ عَلَى التَّقْصِيرِ فِي قِتَالِ أَهْلِ بَغْدَادَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ أَبُو أَحْمَدَ: لِأَمْرِ الْمَنَايَا عَلَيْنَا طَرِيقُ ... وَلِلدَّهْرِ فِينَا اتِّسَاعٌ وَضِيقُ فَأَيَّامُنَا عِبَرٌ لِلَأَنَامِ ... فَمِنْهَا الْبُكُورُ وَمِنْهَا الطَّرُوقُ وَمِنْهَا هَنَاتٌ تُشِيبُ الْوَلِيدَ ... وَيَخْذُلُ فِيهَا الصَّدِيقَ الصَّدِيقُ وَسُورٌ عَرِيضٌ لَهُ ذِرْوَةٌ ... تَفُوتُ الْعُيُونَ وَبَحْرٌ عَمِيقُ قِتَالٌ مُبِيدٌ وَسَيْفٌ عَتِيدٌ ... وَخَوْفٌ شَدِيدٌ وَحِصْنٌ وَثِيقُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৪
সকালে আহবানকারীর অনেক জোরে চিৎকার  ۞  হাতিয়ার হাতিয়ার বলে, কিন্তু তাতে কোন উপকার হচ্ছে না।
কেউ জমিনে পড়ে আছে, কেউ আহাত   ۞  কেউ আগুনে জ্বলছে আর কেউ সাগরে ডুবছে।
কেউ মরে পড়ে আছে আর কেউ বেহুশ হয়ে আছে  ۞  আবার কাউকে মিনজানিকের আঘাতে অঙ্গ প্রতঙ্গ ভেঙ্গে চুর্ণ বিচুর্ণ হয়েছে।
এখানে বেশি বেশি জবরদস্তি হয় এবং লুট করা হয়  ۞  এ এক বিরাণ ঘর বাড়ি যা মানুষ কে খুশি করে।
যখন আমরা কোন রাস্তায় চলতে থকি  ۞  একটু পরে দেখি সামনের রাস্তা বন্ধ।
আল্লাহরই সাহায্যে আমরা আমদের লক্ষ্যে পৌছব  ۞  আল্লাহরই সাহায্যেই দুঃসাধ্য বিষয় অর্জন করে বিজয় আনব।

ইবনে জারির বলেন : এ সমস্ত কবিতা আলী ইবনে উমাইয়ার রচিত। যা তিনি মাখলু ও মামুনের ফেতনার সময় আবৃতি করেন।

বাগদাদে আবূ আহমাদ ও মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের গ্রুফের মাঝে ফেতনা ফাসাদ এবং যুদ্ধ চলতে থাকল। সমস্ত শহর আবূ আহমাদ ঘেরাও করে রাখল। ঐ বছরের বাকি দিনগুলোতে বাগদাদের অধিবাসীরা কঠিন মসিবতে পড়েন। এ দুর্যোগপূর্ণ দিনসমূহে বিভিন্ন হামলায় উভয় গ্রুফের অনেক লোক মারা যায়। কখনো আবূ আহমাদ প্রাধান্যতা লাভ করেন। ফলে শহরের কিছু ফটক দখল করেন। আবার মুহাম্মাদ তাদের উপর হামল করে তাদের কে তাড়িয়ে দেন। অনেক লোককেও হত্যা করেন। তারপর নিজেদের জায়গায় ফিরে আসেন। এরপর কিছু সময় যুদ্ধ বিরত রাখেন।

কিন্তু কখনো কখনো বাগদাদে খাদ্য ও অন্যান্য আসবাবপত্রের আমদানী কমে যাচ্ছিল। তখন বাগদাদবাসীগণ কাপুরুষতার শিকার হচ্ছিল। অতঃপর জনসাধারণ মধ্যে এক কথা ছড়িয়ে গেল যে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ মুস্তাইন কে ছেড়ে মু’তায্যের হাতে বয়াত হওয়ার ইচ্ছা করছে। এটা বছরের শেষের দিকের অবস্থা। কিন্তু মুহাম্মাদ এ বিষয় অস্বীকার করল। খলিফা ও সারধারণ জনতার সামনে ওজর পেশ করল।
وَطُولُ صِيَاحٍ لِدَاعِي الصَّبَاحِ ... السِّلَاحَ السِّلَاحَ فَمَا يَسْتَفِيقُ فَهَذَا طَرِيحٌ وَهَذَا جَرِيحٌ ... وَهَذَا حَرِيقٌ وَهَذَا غَرِيقُ وَهَذَا قَتِيلٌ وَهَذَا تَلِيلٌ ... وَآخَرُ يَشْدُخُهُ الْمِنْجَنِيقُ هُنَاكَ اغْتِصَابٌ وَثَمَّ انْتِهَابٌ ... وَدُورٌ خَرَابٌ وَكَانَتْ تَرُوقُ إِذَا مَا سَمَوْنَا إِلَى مَسْلَكٍ ... وَجَدْنَاهُ قَدْ سُدَّ عَنَّا الطَّرِيقُ فَبِاللَّهِ نَبْلُغُ مَا نَرْتَجِيهِ ... وَبِاللَّهِ نَدْفَعُ مَا لَا نُطِيقُ قَالَ ابْنُ جَرِيرٍ: هَذَا الشِّعْرُ يُنْشَدُ لِعَلِيِّ بْنِ أُمَيَّةَ فِي فِتْنَةِ الْمَخْلُوعِ وَالْمَأْمُونِ. وَقَدِ اسْتَمَرَّتِ الْفِتْنَةُ وَالْقِتَالُ بِبَغْدَادَ بَيْنَ أَبِي أَحْمَدَ أَخِي الْمُعْتَزِّ وَبَيْنَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نَائِبِ الْمُسْتَعِينِ، وَالْبَلَدُ مَحْصُورٌ وَأَهْلُهُ فِي ضِيقٍ شَدِيدٍ جِدًّا بَقِيَّةَ شُهُورِ هَذِهِ السَّنَةِ، وَقُتِلَ مِنَ الْفَرِيقَيْنِ خَلْقٌ كَثِيرٌ فِي وَقَعَاتٍ مُتَعَدِّدَاتٍ، وَأَيَّامٍ نَحِسَاتٍ ; فَتَارَةً يَظْهَرُ أَصْحَابُ أَبِي أَحْمَدَ، وَيَأْخُذُونَ بَعْضَ الْأَبْوَابِ، فَتَحْمِلُ عَلَيْهِمُ الطَّاهِرِيَّةُ فَيُزِيحُونَهُمْ عَنْهَا، وَيَقْتُلُونَ مِنْهُمْ خَلْقًا، ثُمَّ يَتَرَاجَعُونَ إِلَى مَوَاقِفِهِمْ وَيُصَابِرُونَهُمْ مُصَابَرَةً عَظِيمَةً، لَكِنَّ أَهْلَ بَغْدَادَ كُلُّ مَا لَهُمْ إِلَى ضَعْفٍ بِسَبَبِ قِلَّةِ الْمِيرَةِ وَالْجَلَبِ إِلَى دَاخِلِ الْبَلَدِ. ثُمَّ شَاعَ بَيْنَ الْعَامَّةِ أَنْ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ يُرِيدُ أَنْ يَخْلَعَ الْمُسْتَعِينَ وَيُبَايِعَ لِلْمُعْتَزِّ، وَذَلِكَ فِي أَوَاخِرَ السَّنَةِ، فَتَنَصَّلَ مِنْ ذَلِكَ، وَاعْتَذَرَ إِلَى
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৫
এ বিষয়ে বিভিন্নভাবে কসম করতে থাকেন। তারপরেও জনসাধারণের মধ্যে সন্দেহ সংশয় থেকেই গেল। এক সময় জনসাধারণের বড় এক দল মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ির সামনে  একত্রিত হয়ে শোরগোল করতে লাগল। ঐ সময় খলিফাও সেখানে ছিল। তখন মানুষ চাইল খলিফা যেন মানুষের সম্মুখে আসেন। তারা খলিফাকে দেখবেন এবং মুহাম্মাদ সম্মর্কে মতামত জিজ্ঞাসা করবেন। আস্তে আস্তে মানুষের শোরগোল বাড়তে লাগল। অবশেষে খলিফা জনসম্মুখে বের হলেন। তখন তিনি কালো কাপড় পরে ছিলেন এবং তার উপরে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটা চাদর ছিল। আর হাতে একটা লাঠি ছিল।

তিনি জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি তোমাদের কে এই চাদর ও লাঠি ওয়ালার কসম দিয়ে বলতেছি যে, তোমরা বাড়ি ফিরে যাও। ইবনে আবূ তাহেরের ব্যাপারে শান্ত হও। কারণ সে আমার নিকট নিরাপরাধ ব্যক্তি। তখন শোরগোল শেষ হয়ে গেল। সবাই নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেল।

অতঃপর জিলহজ্জ শুরুর দিকে খলিফা ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ি থেকে বের হয়ে রিজ্ক আল খাদেরমের বাড়িতে গেলেন। সেখানে এক দ্বীপে ঈদুল আযহার নামায পড়ালেন। যে দ্বীপটা ইবনে আবূ তাহেরের বাড়ির বিপরিত দিকে অসস্থিত। ঐ দিন খলিফা মানুষের সামনে আসলেন। তখন তাঁর সামনে বল্লম গায়ে নববী চাদর হাতে লাঠি ছিল। ঐ দিন বাগদাদের অধিবাসীদের জন্য এক স্বরণীয় দিন ছিল। কারণ তারা চারিদিক থেকে বেষ্টিত ছিল এবং সমস্ত জিনিসের চড়া দাম ছিল। যে অবস্থার প্রকাশ হয়েছে ক্ষুধা ও ভয়ের পোশাকে।
আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে সকলে সুস্থতা দান করুক।

যখন যুদ্ধের বিষয় আরো বিপদজনক হল। মানুষের অবস্থা আরো গুরুতর ও সংকির্ণ হল। পরিবার ক্ষুধার্ত থাকতে লাগল। সবাই পেরেশান হয়ে গেল। তখন ইবনে তাহের মুসতাইনের পদচ্যুতির যে ইচ্ছা মনের ভিতর গোপন রেখেছিল প্রথমে তা ইশারা ইঙ্গিতে প্রকাশ করেন। পরে প্রকাশ্যে স্পষ্টভাবে বলতে লাগলেন। এমনকি খলিফা মুস্তাইনের সাথে বাগবিতান্ডও করতে লাগলেন। খলিফা কে বলতে লাগলেন এ অবস্থায় আপনার জন্য উচিৎ হল কিছু নগদ ও কিছু বাকি মালের বিনিময়ে খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি গ্রহন করেন। এ মর্মে তাদের সাথে সমঝোতা করেন। আর প্রত্যেক বছর আপনার প্রয়োজন পুরনের জন্য একটা ভাতা নির্ধারণ করে নেন। ইবনে তাহের তার এ চেষ্টা অব্যহত রাখেন।
الْخَلِيفَةِ وَإِلَى الْعَامَّةِ، وَحَلَفَ بِالْأَيْمَانِ الْغَلِيظَةِ، فَلَمْ تَبْرَأْ سَاحَتُهُ مِنْ ذَلِكَ حَقَّ الْبَرَاءَةِ عِنْدَ الْعَامَّةِ، وَاجْتَمَعَتِ الْعَامَّةُ وَالْغَوْغَاءُ إِلَى دَارِ ابْنِ طَاهِرٍ، وَالْخَلِيفَةُ نَازِلٌ بِهَا، فَسَأَلُوا أَنْ يُبْرِزَ لَهُمُ الْخَلِيفَةَ لِيَرَوْهُ وَيَسْأَلُوهُ عَنِ ابْنِ طَاهِرٍ ; أَهْوَ رَاضٍ عَنْهُ أَمْ لَا؟ وَمَا زَالَتِ الضَّجَّةُ وَالْأَصْوَاتُ مُرْتَفِعَةً حَتَّى بَرَزَ الْخَلِيفَةُ مِنْ فَوْقِ الْمَكَانِ الَّذِي هُمْ فِيهِ، وَعَلَيْهِ السَّوَادُ وَمِنْ فَوْقِهِ الْبُرْدَةُ النَّبَوِيَّةُ، وَبِيَدِهِ الْقَضِيبُ، وَقَالَ لَهُمْ فِيمَا خَاطَبَهُمْ بِهِ: أَقْسَمْتُ عَلَيْكُمْ بِحَقٍّ صَاحِبِ هَذِهِ الْبُرْدَةِ وَالْقَضِيبِ لَمَا رَجَعْتُمْ إِلَى مَنَازِلِكُمْ، وَرَضِيتُمْ عَنِ ابْنِ طَاهِرٍ ; فَإِنَّهُ غَيْرُ مُتَّهَمٍ لَدَيَّ. فَسَكَتَ الْغَوْغَاءُ وَرَجَعُوا إِلَى مَنَازِلِهِمْ ثُمَّ انْتَقَلَ الْخَلِيفَةُ مِنْ دَارِ ابْنِ طَاهِرٍ إِلَى دَارِ رِزْقٍ الْخَادِمِ، وَذَلِكَ فِي أَوَائِلِ شَهْرِ ذِي الْحِجَّةِ وَصَلَّى بِهِمُ الْعِيدَ يَوْمَ الْأَضْحَى فِي الْجَزِيرَةِ الَّتِي بِحِذَاءِ دَارَ ابْنِ طَاهِرٍ، وَبَرَزَ الْخَلِيفَةُ يَوْمَئِذٍ لِلنَّاسِ، وَبَيْنَ يَدَيْهِ الْحَرْبَةُ، وَعَلَيْهِ الْبُرْدَةُ، وَبِيَدِهِ الْقَضِيبُ، وَكَانَ يَوْمًا مَشْهُودًا بِبَغْدَادَ عَلَى مَا بِأَهْلِهَا مِنَ الْحِصَارِ، وَغَلَاءِ الْأَسْعَارِ الْمُتَرْجَمَيْنِ عَنْ لِبَاسِ الْجُوعِ وَالْخَوْفِ، نَسْأَلُ اللَّهَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ. وَلَمَّا تَفَاقَمَ الْأَمْرُ، وَاشْتَدَّ الْحَالُ وَضَاقَ الْمَجَالُ، وَجَاعَ الْعِيَالُ، وَجَهِدَ الرِّجَالُ شَرَعَ ابْنُ طَاهِرٍ يُظْهِرُ مَا كَانَ كَامِنًا فِي نَفْسِهِ مِنْ خَلْعِ الْمُسْتَعِينِ، فَجَعَلَ يُعَرِّضُ لَهُ بِذَلِكَ وَلَا يُصَرِّحُ ثُمَّ كَاشَفَهُ بِهِ وَأَظْهَرَهُ لَهُ، وَنَاظَرَهُ فِيهِ، وَقَالَ لَهُ: إِنَّ الْمَصْلَحَةَ تَقْتَضِي أَنْ تُصَالِحَ عَنِ الْخِلَافَةِ عَلَى مَالٍ تَأْخُذُهُ سَلَفًا، وَتَعْجِيلًا، وَأَنْ يَكُونَ لَكَ مِنَ الْخَرَاجِ فِي كُلِّ عَامٍ مَا تَخْتَارُهُ وَتَحْتَاجُهُ. وَلَمْ يَزَلْ يَفْتِلُ فِي الذِّرْوَةِ،
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৬
অবশেষে খলিফা এ প্রস্তাব মানার জন্য তৈরি হয়ে যান। তখন খলিফা মুস্তাইন খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার জন্য যে শর্ত দেন তা একটি কাগজে লেখেন। অতঃপর জিলহজ্জ মাসের বিশ তারিখ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের রসাফা নামক স্থানে যান। কাজী ও বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামদের একত্রিত করেন। তাদেরকে দলে দলে মুস্তাইনের নিকট নিয়ে আসেন। যাতে তারা সাক্ষী থাকে যে খলিফা তাঁর নিজের সমস্ত বিষয় মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের উপর ন্যাস্ত করেছেন। অনুরূপভাবে খাদেম ও অন্যান্য কর্মচারীদের এক জামাতকেও সাক্ষী বানানোর জন্য নিয়ে আসেন। এরপর খেলাফাতের মোহরও নিয়ে নেন। এবং মুস্তাইনের কাছে রাতের অনেক সময় পর্যন্ত বসে থাকেন। তারপর যখন সকাল হল মানুষ তার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে লাগলেন।

অপরদিকে ইবনে তাহের ঐ চুক্তিপত্রের কাগজ আমীর-ওমারাদের এক জামাতের মাধ্যমে সামাররা এলাকায় মু’তায্যের কাছে পাঠান। যখন ঐ আমীর-ওমারাগণ তাঁর কছে পৌঁছে তখন তিনি তাদের অনেক ইজ্জত সম্মান করেন। আর অনেক দামী দামী বিভিন্ন হাদিয়া তোহফা দেন।

এ বিষয়ের বাকি কথা পরবর্তী বছরের আলোচনার শুরুতে আসছে।

এ বছরের রবিউল আওয়াল মাসে কজবিন ও ঝানজান নামক স্থানে আহলে বাইতের আরেক জনের আত্মপ্রকাশ হয়। যার নাম হুসাইন ইবনে আহমাদ ইবনে ইসমাইল ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল আরকাত ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। যিনি আল-কাওকাবী নামে প্রশিদ্ধ ছিল। তার সম্পর্কে আরো কথা পরে আলোচনায় আসবে।

এবছরে ইসমাইল ইবনে আলাবী আত্মপ্রকাশ করেন। যিনি মুসা ইবনে আব্দুল্লাহ আল হাসানীর ভাগিন ছিলেন। তার বিষয়ের আলোচনাও সামনে আসবে।
وَالْغَارِبِ حَتَّى أَجَابَ إِلَى ذَلِكَ وَأَنَابَ. فَكَتَبَ بِمَا اشْتَرَطَهُ الْمُسْتَعِينُ فِي خَلْعِهِ نَفْسَهُ مِنَ الْخِلَافَةِ كِتَابًا. فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ السَّبْتِ لِعَشَرٍ بَقِينَ مِنْ ذِي الْحِجَّةِ رَكِبَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ إِلَى الرُّصَافَةِ، وَجَمَعَ الْقُضَاةَ وَالْفُقَهَاءَ، وَأَدْخَلَهُمْ عَلَى الْمُسْتَعِينِ فَوْجًا فَوْجًا يَشْهَدُونَ عَلَيْهِ أَنَّهُ قَدْ صَيَّرَ أَمْرَهُ إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ، وَكَذَلِكَ جَمَاعَةُ الْحُجَّابِ وَالْخَدَمِ ثُمَّ تَسَلَّمَ مِنْهُ جَوْهَرَ الْخِلَافَةِ، وَأَقَامَ عِنْدَ الْمُسْتَعِينِ إِلَى هَوِيٍّ مِنَ اللَّيْلِ، وَأَصْبَحَ النَّاسُ يَذْكُرُونَ، وَيَتَنَوَّعُونَ فِيمَا يَقُولُونَ مِنَ الْأَرَاجِيفِ، وَأَمَّا ابْنُ طَاهِرٍ، فَإِنَّهُ أَرْسَلَ بِالْكِتَابِ مَعَ جَمَاعَةٍ مِنَ الْأُمَرَاءِ إِلَى الْمُعْتَزِّ بِسَامَرَّا فَلَمَّا قَدِمُوا عَلَيْهِ بِذَلِكَ أَكْرَمَهُمْ، وَخَلَعَ عَلَيْهِمْ، وَأَجَازَهُمْ فَأَسْنَى جَوَائِزَهُمْ، وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ أَوَّلَ السَّنَةِ الدَّاخِلَةِ. وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ فِي رَبِيعٍ الْأَوَّلِ مِنْهَا كَانَ ظُهُورُ رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ أَيْضًا بِأَرْضِ قَزْوِينَ وَزَنْجَانَ ; وَهُوَ الْحُسَيْنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ الْأَرْقَطِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، وَيُعْرَفُ بِالْكَوْكَبِيِّ، وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ هُنَاكَ. وَفِيهَا خَرَجَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ الْعَلَوِيُّ، وَهُوَ ابْنُ أُخْتِ مُوسَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْحَسَنِيِّ. وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ أَيْضًا.
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৭
এই বছরেই কুফাতে বনি তালেবের একজন আত্মপ্রকাশ করেন। যার নাম হুসাইন ইবনে হামজা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। তখন খলিফা মুস্তাইন মুঝাহিম ইবনে খাক্বান কে তার সাথে মুকাবেলা করার জন্য পাঠান। তাদের মাঝে যুদ্ধ হল। এতে মুঝাহিম ইবনে খাক্বান হুসাইন আল আলাবী কে পরাজিত করেন। আর দলের অনেক লোককে হত্যা করল। এরপর মুঝাহিম কুফাতে প্রবেশ করল। এবং সেখানে এক হাজার বাড়ি ঘর জ্বলিয়ে দিল। আর যারা হুসাইনের সহযোগিতা করেছিল তাদের মাল সম্পদ লুট করল। তার কিছু আজাদকৃত বাদিদের বিক্রি করল।

এই বছর মক্কাতে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুসা ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে হাসান ইবনে হাসান আলী ইবনে আবী তালেব আত্মপ্রকাশ করেন। তার ভয়ে মক্কার নায়েব জা’ফর ইবনে ফাযল ইবনে ঈসা ইবনে মূসা পলায়ন করেন। তখন ইসমাইল ইবনে ইউসুফ তার ও তার সাথি সঙ্গির বাড়ি ঘর লুট করেন। তার কিছু সৈন্য বাহিনী ও অন্যান্য কিছু লোকদের কে হত্যা করেন। কাবা ঘরে যে সমস্ত স্বর্ণ, রুপা, আতর, কাবার গেলাফ ইত্যাদি ছিল সব নিয়ে নেন। এবং মানুষের থেকে দুই লক্ষ দিনার কেড়ে নেন।

এরপর মুঝাহিম মদিনা মুনাওয়ারাতে চলে যান। ঐখানের নায়েব আলী ইবনে হুসাইন ইবনে ইসমাইলও তার ভয়ে পালিয়ে যান। তারপর রজব মাসে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ আবার মক্কাতে ফিরে আসেন। এবং মক্কাবাসীদের কে অবরোধ করে রাখল। ফলে ক্ষুধা ও পিপাশায় অনেক মানুষ মারা যায়। ঐ সময় পণ্যের দাম এত বেড়ে গেছিল যে, মাত্র তিন উকিয়া (৩৫৭ গ্রাম) রুটির দাম এক দিরহাম। আর এক রিতিল (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) গোশতের দাম চার দিরহাম। এক বোতল পানির দাম  তিন দিরহাম। মক্কাবাসী এদের কারণে অনেক মুসিবতের শিকার হয়েছে।
মক্কাতে ৫৭ দিন থাকার পর জিদ্দাতে যায়।
وَفِيهَا خَرَجَ بِالْكُوفَةِ أَيْضًا رَجُلٌ مِنَ الطَّالِبِيِّينَ، وَهُوَ الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ فَوَجَّهَ إِلَيْهِ الْمُسْتَعِينُ مُزَاحِمَ بْنَ خَاقَانَ فَاقْتَتَلَا فَهُزِمَ الْعَلَوِيُّ، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَلَمَّا دَخَلَ مُزَاحِمٌ الْكُوفَةَ حَرَّقَ بِهَا أَلْفَ دَارٍ، وَنَهَبَ أَمْوَالَ الَّذِينَ خَرَجُوا مَعَهُ، وَبَاعَ بَعْضَ جِوَارِي الْحُسَيْنِ بْنِ مُحَمَّدٍ هَذَا وَكَانَتْ مُعْتَقَةً عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ الْجَامِعِ. وَفِيهَا ظَهَرَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُوسَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ بِمَكَّةَ، فَهَرَبَ مِنْهُ نَائِبُهَا جَعْفَرُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ عِيسَى بْنِ مُوسَى، فَانْتَهَبَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ مَنْزِلَهُ، وَمَنَازِلَ أَصْحَابِهِ، وَقَتَلَ جَمَاعَةً مِنَ الْجُنْدِ وَغَيْرِهِمْ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ وَأَخَذَ مَا فِي الْكَعْبَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالطِّيبِ وَكُسْوَةَ الْكَعْبَةِ، وَأَخَذَ مِنَ النَّاسِ نَحَوًا مِنْ مِائَتَيْ أَلْفِ دِينَارٍ، ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَدِينَةِ النَّبَوِيَّةِ، فَهَرَبَ مِنْهُ عَامِلُهَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ ثُمَّ رَجَعَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ إِلَى مَكَّةَ فِي رَجَبٍ فَحَصَرَ أَهْلَهَا حَتَّى هَلَكُوا جُوعًا وَعَطَشًا فَبِيعَ الْخُبْزُ ثَلَاثُ أَوَاقٍ بِدِرْهَمٍ وَاللَّحْمُ الرِّطْلُ بِأَرْبَعَةٍ، وَشَرْبَةُ الْمَاءِ بِثَلَاثَةِ دَرَاهِمَ، وَلَقِيَ مِنْهُ أَهْلُ مَكَّةَ كُلَّ بَلَاءٍ، ثُمَّ رَجَعَ عَنْهُمْ إِلَى جُدَّةَ بَعْدَ مُقَامِ سَبْعَةٍ وَخَمْسِينَ يَوْمًا فَانْتَهَبَ أَمْوَالَ التُّجَّارِ هُنَالِكَ، وَأَخَذَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৮
সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের মাল লুট করে নেয়। তাদের বাহন কেড়ে নেয়। মক্কায় এক কাফেলা ইয়ামান থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছিল সেগুলোও লুট করে। এরপর আবার মক্কতে ফিরে আসে। আল্লাহ তায়ালাই মুসমানদের পক্ষ থেকে তার প্রতিশোধ নিক। হজ্জের সময় আরাফার দিন মানুষদের কে আরাফার ময়দানে অবস্থান করতে দেয় নি। দিনের বেলাও রাতেও না। অনেক হাজীদের কে হত্যা করে। তাদের মাল সম্পদ কেড়ে নেয়। ঐ বছর সে এবং তার সাথি সঙ্গি ছাড়া আর কেউ আরাফার ময়দানে অবস্থান করেনি। আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের কোন ইবাদত কবুল না করেন।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :

ইসহাক ইবনে মানসুর কাওসাজ
হুমাইদ ইবনে ঝানজাওয়াহ
আমর ইবনে উসমান ইবনে কাছির ইবনে দিনার হিমসী
আবূ নাকী হিশাম ইবনে আব্দুল মালিক আল ইয়াঝানী
الْمَرَاكِبَ، وَقَطَعَ الْمِيرَةَ عَنْ أَهْلِ مَكَّةَ حَتَّى جُلِبَتْ إِلَيْهَا مِنَ الْيَمَنِ، ثُمَّ عَادَ إِلَى مَكَّةَ لَا جَزَاهُ اللَّهُ خَيْرًا عَنِ الْمُسْلِمِينَ، فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ عَرَفَةَ لَمْ يُمَكِّنِ النَّاسَ مِنَ الْوُقُوفِ نَهَارًا وَلَا لَيْلًا، وَقَتَلَ مِنَ الْحَجِيجِ أَلْفًا وَمِائَةً، وَسَلَبَهُمْ أَمْوَالَهُمْ، وَلَمْ يَقِفْ بِعَرَفَةَ عَامَئِذٍ سِوَاهُ، وَمِنْ مَعَهُ مِنْ أَصْحَابِهِ، لَا تَقَبَّلَ اللَّهُ مِنْهُمْ صَرْفًا وَلَا عَدْلًا. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَفِيهَا تُوُفِّيَ مِنَ الْأَعْيَانِ: إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ الْكَوْسَجُ. وَحُمَيْدُ بْنُ زَنْجَوَيْهِ. وَعَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ دِينَارٍ الْحِمْصِيُّ. وَأَبُو النَّقِيِّ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْيَزَنِيُّ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৭৯
[ হিজরি ২৫২ সাল ]
[ মু’তায্যের খেলাফত কাল ]
এর পর ২৫২ হিজরী শুরু হল।
মুস্তাইন খেলাফত থেকে অব্যহতি নেয়ার পরে মু’তায্য বিল্লাহ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের খেলাফতের আলোচনা।

এ বছরের শুরুটা এমন সময় হল যে, আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ মু’তায্য ইবনে জা’ফার মুতাওয়াক্কিল ইবনে মুহাম্মাদ মু’তাসিম ইবনে হারুনুর রশীদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মাহদী ইবনে আবূ জা’ফার আল-মানসুর খেলাফাতের দায়িত্ব গ্রহন করেছেন এবং তার নামে খেলাফাত দৃঢ় হয়েছে।

কেউ কেউ বলেন মু’তযযের মূল নাম আহমাদ আবার কেউ বলেন তার নাম যুবায়ের। ইবনে আসাকির দ্বিতীয় মতটাকে প্রধান্য দিছেন। তার ইতিহাস গ্রন্থে মু’তাযযের আলোচনা করার সময যুবায়ের নামে উল্লেখ করেন।

যখন মুস্তাইন খেলাফাত থেকে অব্যহতি গ্রহন করেন এবং মু’তাযযের হাতে বায়াত গ্রহন করেন। তখন বাগদাদে জামে মসজিদে খতীবগন মহাররমের চার তারিখ জুমার খুতবায় মেম্বারে খলিফা মু’তাযযের নাম ঘেষনা করেন। আর সাবেক খলিফ মুস্তাইন তার পরিবার, সন্তানাদী ও গোলাম বাদী সব নিয়ে রসাফা নামক এলাকে থেকে হাসান ইবনে সাহলের প্রাসাদে চলে যান। খলিফা তাদেরকে পৌছে দেয়ার জন্য তাদের সাথে সাঈদ ইবনে রজা এর নেতৃত্বে এক জামাত পাঠান। আর তারা মুস্তইন থেকে খেলাফতের চাদর, লাঠি ও মোহর নিয়ে এসে খলিফা মু’তায্য কে দিল। এরপরে মু’তায্য মুস্তাইনের কাছে আবার লোক পাঠাল তার কাছে যে দুটি মতির আংটি আছে তা দিয়ে দিতে। যে আংটির একটির নাম বুরজ আর অপরটির নাম জাবাল। তিনি উভয় আংটি দিয়ে দেন।
[سَنَةُ ثِنْتَيْنِ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [خِلَافَةُ الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ ثِنْتَيْنِ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ ذِكْرُ خِلَافَةِ الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ عَلَى اللَّهِ بَعْدَ خَلْعِ الْمُسْتَعِينِ نَفْسَهُ اسْتَهَلَّتْ هَذِهِ السَّنَةُ وَقَدِ اسْتَقَرَّتِ الْخِلَافَةُ بِاسْمِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الْمُعْتَزِّ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرٍ الْمُتَوَكِّلِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْمُعْتَصِمِ بْنِ هَارُونَ الرَّشِيدِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْمَهْدِيِّ بْنِ أَبِي جَعْفَرٍ الْمَنْصُورِ، وَقِيلَ: إِنَّ اسْمَ الْمُعْتَزِّ أَحْمَدُ. وَقِيلَ: الزُّبَيْرُ. وَهُوَ الَّذِي عَوَّلَ عَلَيْهِ الْحَافِظُ ابْنُ عَسَاكِرَ وَتَرْجَمَهُ فِي " تَارِيخِهِ ". فَلَمَّا خَلَعَ الْمُسْتَعِينُ - أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمُعْتَصِمِ - نَفْسَهُ مِنَ الْخِلَافَةِ وَبَايَعَ لِلْمُعْتَزِّ، دَعَا الْخُطَبَاءُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ رَابِعَ الْمُحَرَّمِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ بِجَوَامِعِ بَغْدَادَ عَلَى الْمَنَابِرِ لِلْخَلِيفَةِ الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ. وَانْتَقَلَ الْمُسْتَعِينُ مِنَ الرُّصَافَةِ إِلَى قَصْرِ الْحَسَنِ بْنِ سَهْلٍ هُوَ وَعِيَالُهُ وَوَلَدُهُ وَجَوَارِيهِ، وَوَكَّلَ بِهِمْ سَعِيدَ بْنَ رَجَاءٍ فِي جَمَاعَةٍ مَعَهُ، وَأَخَذَ مِنَ الْمُسْتَعِينِ الْبُرْدَةَ وَالْقَضِيبَ وَالْخَاتَمَ، وَبَعَثَ بِذَلِكَ إِلَى الْمُعْتَزِّ، ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَيْهِ الْمُعْتَزُّ يَطْلُبُ مِنْهُ خَاتَمَيْنِ مِنْ جَوْهَرٍ ثَمِينٍ بَقِيَا عِنْدَهُ يُقَالُ لِأَحَدِهِمَا: بُرْجٌ. وَلِلْآخَرِ: جَبَلٌ. فَأَرْسَلَهُمَا. وَطَلَبَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৮০
তারপর মুস্তাইন মক্কা মুকাররমায় যেতে চাইলেন। কিন্তু তাকে যেতে অনুমতি দেয়া হল না। তখন তিনি বসরায যেতে চাইলেন। তাকে বলা হল ঐ এলাকায় বিপদ বেশি। উত্তরে মুস্তাইন বলল খেলাফত ছেড়ে দেয়া তার থেকে বেশি বিপদ। অবশেষে তিনি ওসিত নামক এলাকায় যাওয়ার অনুমতি পেল। এরপর তিনি রওনা হলেন। তার সাথে চারশত দেহরক্ষী ছিল। যারা তাকে ঐ স্থানে পৌছে দিল।

খলিফা মু’তায্য আহমাদ ইবনে আবূ ইসরাইল কে উজির বানান। তাকে শাহী পোশাক পরিয়ে দেন। তার মাথায় মুকুট পরিয়ে দেন। যখন বাগদাদের পরিস্থিতি শান্ত হল এবং মু’তাযযের খেলাফাত দৃঢ় হল। মানুষ তার অনুগত হল। তখন চারোদিক থেকে খাদ্য বস্ত্র ও অন্যান্য আসবাবপত্র আমদানী শুরু হল। বাগদাদের মানুষ সভাবিক জীবন যাপন শুরু করল।
তখন আবূ আহমাদ মুহাররমের ১২ তারিখ শনিবার বাগদাদ থেকে সামাররায় দিকে রওয়ানা হন। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের অন্যান্য আমীর উমারা সহ তাকে বিদায় জানানোর জন্য এগিয়ে যান। ঐ সময় আবূ আহমাদ, মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের কে পাঁচটি মুল্যবান পোশাক ও একটি তলোয়ার হাদিয়া দিলেন। রোযাবার নামক স্থান থেকে তাকে বাগদাদে ফিরত পাঠিয়ে দিলেন।

এ সময় খলিফা মু’তাযযের সম্পর্কে কবিগণ বিভিন্ন কবিতা রচনা করেন। ইবনে জারির তা বর্ণনা করেছেন। এ সমস্ত কবিতায় মু’তাযযের প্রশংসা করেছেন এবং মুস্তাইনের খেলাফাত থেকে পদত্যাগ করার কারণে আনন্দ করেছেন। এ সময় কবিগণ একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা দিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। সবথেকে সুন্দরভাবে মু’তাযযের প্রশংসা এবং মুস্তাইনের দোষ বর্ণনা করেছেন মারওয়ান ইবনে আবূ জুনুব ইবনে মারওয়ান

খেলাফাতের সমস্ত বিষয় মু’তাযযের ফিরে আসছে  ۞  আর মুস্তাইন তার পূর্বের অস্থায় ফিরে গেছে।
সে জানত খেলাফাত তার না  ۞  বরং আপনার। কিন্তু তার মন তাকে ধোকা ফেলে রেখেছিল।
বাস্তবে রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তায়ালা খেলাফাত দানকারী এবংতিনিই ছিনিয়ে নেই  ۞  তিনিই আপনাকে খেলাফাত দান করেছেন। আর তার থেকে ছিনিয়ে নিছেন।
আর সত্য হল সে খেলাফাতের দায়িত্ব তার শোভা পায় না  ۞  যেমন বিবাহিত মহিলা অন্যের সাথে নিকাহে মুতা’ (অল্প সময়ের জন্য বিবাহে বসা) শোভা পায় না।
الْمُسْتَعِينُ أَنْ يَسِيرَ إِلَى مَكَّةَ فَلَمْ يُمَكَّنْ، فَطَلَبَ الْبَصْرَةَ فَقِيلَ لَهُ: إِنَّهَا وَبِيئَةٌ. فَقَالَ: إِنَّ تَرْكَ الْخِلَافَةِ أَوْبَأُ مِنْهَا. ثُمَّ أَذِنَ لَهُ فِي الْمَسِيرِ إِلَى وَاسِطَ فَخَرَجَ وَمَعَهُ حَرَسٌ يُوَصِّلُونَهُ إِلَيْهَا نَحْوٌ مَنْ أَرْبَعِمِائَةٍ. وَاسْتَوْزَرَ الْمُعْتَزُّ أَحْمَدَ بْنَ أَبِي إِسْرَائِيلَ، وَخَلَعَ عَلَيْهِ، وَأَلْبَسَهُ تَاجًا عَلَى رَأْسِهِ. وَلَمَّا تَمَهَّدَ أَمْرُ بَغْدَادَ وَاسْتَقَرَّتِ الْبَيْعَةُ لِلْمُعْتَزِّ بِهَا، وَدَانَ لَهُ أَهْلُهَا وَاجْتَمَعَ شَمْلُهَا، وَقَدِمَتْهَا الْمِيرَةُ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ، وَاتَّسَعَ النَّاسُ فِي الْأَرْزَاقِ وَالْأَطْعِمَةِ، رَكِبَ أَبُو أَحْمَدَ مِنْهَا فِي يَوْمِ السَّبْتِ لِاثْنَتَيْ عَشْرَةَ لَيْلَةً خَلَتْ مِنَ الْمُحَرَّمِ إِلَى سَامَرَّا، وَشَيَّعَهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ فِي وُجُوهِ الْقُوَّادِ، فَخَلَعَ أَبُو أَحْمَدَ عَلَى ابْنِ طَاهِرٍ خَمْسَ خِلَعٍ وَسَيْفًا، وَرَدَّهُ مِنَ الرُّوذَبَارِ. وَقَدْ ذَكَرَ ابْنُ جَرِيرٍ مَدَائِحَ الشُّعَرَاءِ فِي الْمُعْتَزِّ وَتَشَفِّيَهُمْ بِخَلْعِ الْمُسْتَعِينِ، فَأَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ جِدًّا. فَمِنْ ذَلِكَ قَوْلُ مُحَمَّدِ بْنِ مَرْوَانَ بْنِ أَبِي الْجَنُوبِ بْنِ مَرْوَانَ فِي مَدْحِ الْمُعْتَزِّ وَذَمِّ الْمُسْتَعِينِ كَمَا جَرَتْ بِهِ عَادَةُ الشُّعَرَاءِ: إِنَّ الْأُمُورَ إِلَى الْمُعْتَزِّ قَدْ رَجَعَتْ ... وَالْمُسْتَعِينُ إِلَى حَالَاتِهِ رَجَعَا وَكَانَ يَعْلَمُ أَنَّ الْمُلْكَ لَيْسَ لَهُ ... وَأَنَّهُ لَكَ لَكِنْ نَفْسَهُ خَدَعَا وَمَالِكُ الْمُلْكِ مُؤْتِيهِ وَنَازِعُهُ ... آتَاكَ مُلْكًا وَمِنْهُ الْمُلْكَ قَدْ نَزَعَا إِنَّ الْخِلَافَةَ كَانَتْ لَا تُلَائِمُهُ ... كَانَتْ كَذَاتِ حَلِيلٍ زُوِّجَتْ مُتَعَا
পৃষ্ঠা - ৮৭৮১
মানুষের কাছে তার খেলাফাতের থেকে খারাপ কিছু নেই  ۞  সে খেলাফত থেকে পদত্যাগ করাতে মানুষ অনেক খুুশি হয়েছে।
হায় যদি কোন নৌকা তাকে উঠিয়ে নিয়ে কোন টিলায় ফেলে রেখে আসত  ۞  তাহলে যে মাঝি তাকে ফেলে রেখে আসত তার উপর আমার জান কোরবান করে দিতাম।
কত বাদশা আপনার পূর্বে রাজত্ব করেছে  ۞  কিন্তু রাষ্টের যে বড় দায়িত্ব আপনার উপর অর্পণ করা হয়েছে যদি তাদের উপর অর্পন করা হত তাহলে তারা ভালোভাবে চলতে পারত না।
আপনার মাধ্যমে মানুষ সংকির্ণ জিন্দিগী থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তিপূর্ণ জিন্দিগী পেয়েছে  ۞  আল্লাহ তায়ালাই সংকির্ণ জিবনের পর শান্তিপূর্ণ জিবন দান করেন।
আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করি এই খেলাফাতের কারণে আপনার থেকে সমস্ত মন্দ বিষয়সমূহ কে দুর করে দেন  ۞  কারণ আপনার মাধ্যমেই আমাদের মন্দ বিষয়সমূহ দুর হয়েছে।

এরপর মু’তায্য বাগদাদের প্রতিনিধি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশ দিলেন ওসিফ, বুগা এবং এ দুজনের রেজিষ্টারে যাদের নাম আছে সবাই কে বাদ দিতে। এবং তিনি ওসিফ ও বুগা কে হত্যা করার ইচ্ছা করেন। অতঃপর তাদের ব্যাপারে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করা হল। তখন তিনি শান্ত হয়ে গেলেন।

ঐ বছর রজম মাসে মু’তায্য তার ভাই ইবরাহীম যার ডাক নাম মুয়াইয়্যাদ কে তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেন এবং তাকে চল্লিশ বেত্রাঘাত মারেন। আর তার অপর ভাই আহমাদ কেও জেলখানায় বন্ধি করেন। শুক্রবারে দিন তাকে বরখাস্ত করার ঘোষনা দেন। আর তাকে নির্দেশ দিলেন নিজেই পদত্যাগপত্র জমা দিতে। তারপর তিনি মাত্র পনের দিন বেচে ছিলেন। তার হত্যার পদ্ধতির ব্যাপারে দুই রকম মত আছে।
১। কেউ বলেন তাকে উটের চামড়ার ভিতরে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান।
২। আর কেউ বলেন তাকে বরফের বড় খন্ডের উপর শোয়ানো হয়। ফলে সে ঠান্ডায় মারা যায়। তারপর তাকে জেলখানা থেকে বের করা হয়। তখন তার শরিরে কোন আঘাত বা মার-পিটের চি‎হ্ন ছিল না।

অতঃপর কাজী এবং আমীর এক জামাতকে ডাক হল। তাদের কে সাক্ষী বানানো হল যে, তিনি সাভাবিকভাবে কোন কারণ ছাড়া মারা গেছে এবং তার শরিরে আঘাতের কোন চি‎হ্ন নেই। এরপর কাফন পরানো হয়।
مَا كَانَ أَقْبَحَ عِنْدَ النَّاسِ بَيْعَتَهُ ... وَكَانَ أَحْسَنَ قَوْلَ النَّاسِ قَدْ خُلِعَا لَيْتَ السَّفِينَ إِلَى قَافٍ دَفَعْنَ بِهِ ... نَفْسِي الْفِدَاءُ لِمَلَّاحٍ بِهِ دَفَعَا كَمْ سَاسَ قَبْلَكَ أَمْرَ النَّاسِ مِنْ مَلِكٍ ... لَوْ كَانَ حُمِّلَ مَا حُمِّلْتَهُ ظَلَعَا أَمَسَى بِكَ النَّاسُ بَعْدَ الضِّيقِ فِي سِعَةٍ ... وَاللَّهُ يَجْعَلُ بَعْدَ الضِّيقِ مُتَّسَعَا وَاللَّهُ يَدْفَعُ عَنْكَ السُّوءَ مِنْ مَلِكٍ ... فَإِنَّهُ بِكَ عَنَّا السُّوءَ قَدْ دَفَعَا وَكَتَبَ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ الْمُعْتَزُّ مِنْ سَامَرَّا إِلَى نَائِبِ بَغْدَادَ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ أَنْ يُسْقِطَ اسْمَ وَصِيِفٍ وَبُغَا وَمَنْ كَانَ فِي رَسْمِهِمَا فِي الدَّوَاوِينِ، وَعَزَمَ عَلَى قَتْلِهِمَا، ثُمَّ اسْتُرْضِيَ عَنْهُمَا، فَرَضِيَ عَنْهُمَا. وَفِي رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ خَلَعَ الْمُعْتَزُّ أَخَاهُ إِبْرَاهِيمَ الْمُلَقَّبَ بِالْمُؤَيَّدِ مِنْ وِلَايَةِ الْعَهْدِ وَحَبَسَهُ، وَأَخَاهُ أَبَا أَحْمَدَ، بَعْدَمَا ضَرَبَ الْمُؤَيَّدَ أَرْبَعِينَ مَقْرَعَةً. وَلَمَّا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ سَابِعُهُ خَطَبَ بِخَلْعِهِ، وَأَمْرَهُ أَنْ يَكْتُبَ كِتَابًا عَلَى نَفْسِهِ بِذَلِكَ. وَكَانَتْ وَفَاتُهُ بَعْدَ ذَلِكَ بِخَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا، فَقِيلَ: إِنَّهُ أُدْرِجَ فِي لِحَافِ سَمُّورٍ وَأُمْسِكَ طَرَفَاهُ حَتَّى مَاتَ غَمًّا. وَقِيلَ: بَلْ ضُرِبَ بِحِجَارَةٍ مِنْ ثَلْجٍ حَتَّى مَاتَ بَرْدًا. وَبَعْدَ ذَلِكَ كُلِّهِ أُخْرِجَ مِنَ السِّجْنِ وَلَا أَثَرَ بِهِ، فَأُحْضِرَ الْقُضَاةُ وَالْأَعْيَانُ فَأُشْهِدُوا عَلَى مَوْتِهِ مِنْ غَيْرِ سَبَبٍ وَلَيْسَ بِهِ أَثَرٌ، ثُمَّ حُمِلَ عَلَى حِمَارٍ وَمَعَهُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৮২
তারপর গাধার পিঠে উঠায়ে তার মায়ের কাছে পাঠান। তার মা তাকে দাফন করেন।

[ মুস্তাইনের হত্যার ঘটনা ]
এ বছরের শাওয়াল মাসের কথা। মু’তায্য তার প্রতিনিধি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের চিঠি লিখল। তাকে নির্দেশ দিল সৈন্য বাহিনী প্রস্তুত করে মুস্তাইনের সাথে মুকাবেলা করার জন্য পাঠাতে। সুতরাং তিনি আহমাদ ইবনে তুলুন তুর্কী কে খুব ভালোভাবে প্রস্তুত করলেন। ২৪ শে রমাযান মুস্তাইনের সাথে মুকাবেলা করার জন্য আহমাদ ইবনে তুলুন কে পাঠাল। কতুল মুস্তাইন কে গ্রেফতার করে আহমাদ ইবনে তুলুনের কাছে নিয়ে আসেন। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়।
কেউ কেউ বলেন তাকে পিটাতে পিটাতে মেরে ফেলেছে।
আর কেউ বলেন দাজলা নদীতে ডুবিয়ে মারা হয়েছে।
কেউ বলেন তার গর্দান কেটে হত্যা করা হয়েছে।

ইবনে জারির বলেন, মুস্তাইন কে যখন হত্যা করা হয় তখন তিনি সাঈদ ইবনে সালেহ তুর্কীর কাছে দুই রাকাত নামায পড়ার সুযোগ চান। তখন তাকে নামায পড়ার সুযোগ দেওয়া হল। যখন তিনি তার নামাযের শেষ সেজদায় ছিল তখন তাকে সেজদারত অবস্থায়-ই হত্যা করা হয়। এবং তাকে তার নামাযের স্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু দাফনের কোন চি‎হ্ন বাকি রাখল না। তারপর তার মাথা নিয়ে খলিফা মু’তাযযের কাছে নিয়ে গেল। যখন তারা মু’তাযযের কাছে পৌছল তখন তিনি শতরঞ্জ (দাবা) খেলছিল। তাকে বলা হল, এই মুস্তাইনের মাথা।
كَفَنُهُ، فَأُرْسِلَ بِهِ إِلَى أُمِّهِ فَدَفَنَتْهُ. [ذِكْرُ مَقْتَلِ الْمُسْتَعِينِ] فِي شَوَّالٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ كَتَبَ الْمُعْتَزُّ إِلَى نَائِبِهِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ يَأْمُرُهُ بِتَجْهِيزِ جَيْشٍ نَحْوَ الْمُسْتَعِينِ، فَجَهَّزَ أَحْمَدَ بْنَ طُولُونَ التُّرْكِيَّ فَوَافَاهُ، فَأَخْرَجَهُ لِسِتٍّ بَقِينَ مِنْ رَمَضَانَ فَقَدِمَ بِهِ الْقَاطُولَ لِثَلَاثٍ مَضَيْنَ مِنْ شَوَّالٍ ثُمَّ قُتِلَ ; فَقِيلَ: ضُرِبَ حَتَّى مَاتَ، وَقِيلَ: بَلْ غُرِّقَ فِي دُجَيْلٍ وَقِيلَ: بَلْ ضُرِبَتْ عُنُقُهُ. وَقَدْ ذَكَرَ ابْنُ جَرِيرٍ أَنَّ الْمُسْتَعِينَ سَأَلَ مِنْ سَعِيدِ بْنِ صَالِحٍ التُّرْكِيِّ حِينَ أَرَادَ قَتْلَهُ أَنْ يُمْهِلَهُ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ، فَأَمْهَلَهُ، فَلَمَّا كَانَ فِي السَّجْدَةِ الْأَخِيرَةِ قَتَلَهُ وَهُوَ سَاجِدٌ، وَدَفَنَ جُثَّتَهُ فِي مَكَانِ صِلَاتِهِ، وَعَفَّا أَثَرَهُ، وَحَمَلَ رَأْسَهُ إِلَى الْمُعْتَزِّ فَدَخَلَ بِهِ عَلَيْهِ وَهُوَ يَلْعَبُ بِالشِّطْرَنْجِ، فَقِيلَ: هَذَا رَأْسُ الْمَخْلُوعِ. فَقَالَ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৩

তিনি উত্তরে বললেন : রেখে দাও, আমার খেলা শেষ করি। অতপর যখন খেলা শেষ হল তখন তাকিয়ে দেখলেন। অতঃপর দাফন করতে নির্দেশ দিলেন। মুস্তাইন কে হত্যাকারী সাঈদ ইবনে সালেহ কে পঞ্চশ হাজার দেরহাম পুরষ্কার দিলেন এবং বসরার বিচারকের পদে নিয়োগ দিলেন।

[ এ বছরে বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা মৃত্যু বরণ করেন ]
নি¤েœর ব্যক্তিগণ এ বছর মৃত্যু বরণ করেন :
ইসমাইল ইবনে ইউসুফ আলাবী। যিনি মক্কায় অসাভাবিক যুলুম নির্যাতন করেছে। যিনি হেরেম শরীফে অনৈসলামিক ও অনৈতিক অনেক কাজ কর্ম করেছে। যে আলোচনা ইতিপূর্বে চলে গেছে। আল্লাহ তায়ালা এই যালেম কে হঠাৎ ধংশ করে দেছেন। কোন রকম সুযোগ দেন নাই।
আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ আল-মু’তাসিম। যার ডাক নাম মুস্তাইন বিল্লাহ। যার আলোচনা করা হয়েছে।
ইসহাক ইবনে বুহলুল।
যিয়াদ ইবনে আইয়্যুব।
মুহাম্মাদ ইবনে বাশ্শার।
বুনদার।
মুহাম্মাদ ইবনে মুছান্না আঝ-ঝামিন।
ইয়াকুব ইবনে ইবরাহীম আদ-দাওরাকী।
ضَعُوهُ حَتَّى أَفْرُغَ مِنَ الدَّسْتِ. فَلَمَّا فَرَغَ نَظَرَ إِلَيْهِ، وَأَمَرَ بِدَفْنِهِ، ثُمَّ أَطْلَقَ لِسَعِيدِ بْنِ صَالِحٍ الَّذِي قَتَلَهُ خَمْسِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ، وَوَلَّاهُ مَعُونَةَ الْبَصْرَةِ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَفِي هَذِهِ السَّنَةِ مَاتَ: إِسْمَاعِيلُ بْنُ يُوسُفَ الْعَلَوِيُّ الَّذِي فَعَلَ بِمَكَّةَ مَا فَعَلَ، وَأَلْحَدَ فِي الْحَرَمِ مَا أَلْحَدَ - كَمَا تَقَدَّمَ - فَأَهْلَكَهُ اللَّهُ فِي هَذِهِ السَّنَةِ عَاجِلًا وَلَمْ يُنْظِرْهُ. وَأَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمُعْتَصِمِ، وَهُوَ الْمُسْتَعِينُ بِاللَّهِ كَمَا تَقَدَّمَ. وَإِسْحَاقُ بْنُ بُهْلُولٍ، وَزِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، بُنْدَارٌ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الزَّمِنُ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৪
[ হিজরি ২৫৩ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এর পর ২৫৩ হিজরী শুরু হল।
এ বছর রজব মাসের ঘটনা। খলিফা মু’তায্য মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীরের নেতৃত্বে প্রায় চার হাজার সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী আব্দুল আজিজ ইবনে আবূ দুলাফের সাথে যুদ্ধ করার জন্য হামাযানের এক অঞ্চলে পাঠাল। কারণ সে খলিফার সাথে বিদ্রহ করে আনুগত্য করতে অস্বিকার করেছিল। সে প্রায় বিশ হাজার লোকের বাহিনী নিয়ে মুকাবেলার জন্য প্রস্তুত হল। অবশেষে এই মাসের শেষে মূসা ইবনে বুগা আব্দুল আজিজ কে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করল। তারপর রমাযান মাসে কারাজ নামক এলাকায় উভয় গ্রুফের মধ্যে আবার লড়াই হয়। আব্দুল আজিজ আবারও পরজিত হয়। তার দলের অনেক লোক মারা যায়। অনেক অল্প বয়সী বাচ্চাদের বদ্ধি করা হয়। এমনকি আব্দুল আজিজের মাও বন্ধি হয়। নিহতদের মাথা ও অনেক নেতাদের কে সত্তরটা উটে উঠায়ে খলিফার কাছে পাঠানো হয়। আর যে সমস্ত এলাকা আব্দুল আজিজে অধিনে ছিল তা দখল করে নেয়া হয়।

এ বছর রমযানে মু’তয্য বুগা শারানী কে শাহী পোশাক ও তাজ পরিয়ে দেন। এবং দুটি দামী কোমর বন্ধনী দেন।

এ বছর ঈদুল ফিতরের দিন বাওয়াঝিজ নামক স্থানে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটল। তাহল মুসাবির ইবনে আব্দুল হামীদ কে ঐ এলাকার হাকেম নিযুক্ত করা হয়। প্রায় সাত শত খারেজী তার সাথে লড়াই করার জন্য তৈরি হল।
[سَنَةُ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِي رَجَبٍ مِنْهَا عَقَدَ الْمُعْتَزُّ لِمُوسَى بْنِ بُغَا الْكَبِيرِ عَلَى جَيْشٍ قَرِيبٍ مِنْ أَرْبَعَةِ آلَافٍ ; لِيَذْهَبُوا إِلَى قِتَالِ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي دُلَفٍ بِنَاحِيَةِ هَمَذَانَ ; وَذَلِكَ لِأَنَّهُ خَرَجَ عَنِ الطَّاعَةِ، وَهُوَ فِي نَحْوٍ مِنْ عِشْرِينَ أَلْفًا، فَهَزَمُوا عَبْدَ الْعَزِيزِ فِي أَوَاخِرِ هَذَا الشَّهْرِ هَزِيمَةً فَظِيعَةً. ثُمَّ كَانَتْ بَيْنَهُمَا وَقْعَةٌ أُخْرَى فِي رَمَضَانَ عِنْدَ الْكَرَجِ فَهُزِمَ عَبْدُ الْعَزِيزِ أَيْضًا، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَأَسَرُوا ذَرَارِيَّ كَثِيرَةً حَتَّى أَسَرُوا أَمَّ عَبْدِ الْعَزِيزِ، وَبَعَثُوا إِلَى الْخَلِيفَةِ سَبْعِينَ حِمْلًا مِنَ الرُّءُوسِ وَأَعْلَامًا كَثِيرَةً، وَأُخِذَ مِنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ مَا كَانَ اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِ مِنْ بِلَادِ الْخَلِيفَةِ. وَفِي رَمَضَانَ مِنْهَا خَلَعَ الْمُعْتَزُّ عَلَى بُغَا الشَّرَابِيِّ وَأَلْبَسَهُ التَّاجَ وَالْوِشَاحَيْنِ. وَفِي يَوْمِ عِيدِ الْفِطْرِ كَانَتْ وَقْعَةٌ هَائِلَةٌ عِنْدَ الْبَوَازِيجِ ; وَذَلِكَ أَنَّ رَجُلًا يُقَالُ لَهُ: مُسَاوِرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ حَكَمَ فِيهَا وَالْتَفَّ عَلَيْهِ نَحْوٌ مَنْ سَبْعِمِائَةٍ مِنَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৫
মুসাবিরের সাহায্যের জন্য বুনদার নামের একজন লোক এগিয়ে আসল। সে তিন শত লোক নিয়ে আসছিল। এই দিনে তারা পরস্পর মুখমুখি হল। কঠিন যুদ্ধ হল। খারেজীদের পাঁচশর মত লোক নিহত হল। এবং বুনদারের সঙ্গিদের মধ্যে দুশত লোক নিহত হল। আর কেউ বলেন পঞ্চাশ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বুনদারও ছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর রহম করুন।

এর পরে মুসাবির হুলওয়ান নমক এলাকায় যান। ঐ এলাকার অধিবাসীদের সাথে যুদ্ধ করেন। খুরাসান এলাকার হাজীগণ ঐ সময় তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। মুসাবির তাদের প্রায় চারশত লোককে হত্যা করেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে অমঙ্গল করুক। মুসাবিরের দলেরও অনেক লোক মারা যায়।

এ বছরের শাওয়াল মাসের ২৭ তারিখ ওসিফ তুর্কী কেও হত্যা করা হয়। জনসাধারণ তার বাড়ি ও তার সন্তানদের বাড়ি লুট করতে চাইল। কিন্তু সফলকাম হতে পারেনি। ঐ সময় তার উপর যে সমস্ত দায়িত্ব ছিল তা বুগা আশ-শারাবীর উপর অর্পণ করা হল।

এ বছরেই জিলকদ মাসের ১৪ তারিখ চন্দ্র গ্রহন হয়েছিল। চাদের অধিকাংশ বিলিন হয়ে গেছিল। চরিদিকে অন্ধকার হয়ে গেছিল। চন্দ্র গ্রহনের শেষের দিকে ইরাকের প্রতিনিধি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের মারা যান। মৃত্যুর কারণ হল তার মাথা ও গলায় ক্ষত ছিল। আর সে ক্ষতের কারণেই তার মৃত্যু হয়। যখন তার জানাযা পড়ার জন্য উপস্থিত করা হল তখন তার ভাই ওবাইদুল্লাহ ও তার ছেলে তাহের মধ্যে মত বিরোধ হল। তাদের দুজনের মধ্যে কে জানাযা পড়াবেন? এ মতবিরেধ এক পর্যায়ে ঝগড়ায় রূপ নিল এবং তারা তরবারি বের করল। মানুষের উপর পাথরের বর্ষন হতে লাগল (অথাৎ মানুষ এলো মেলো পাথর ছুড়তে লাগল)। মানুষ হে তাহের হে মানসুর বলে বলে চিৎকার করতে লাগল। এ অবস্থা দেখিয়া তার ভাই পূর্ব দিকে নিজের বাড়িতে চলে গেলেন। তার সাথে বড় বড় নেতা ও দায়িত্বশীলগণও ছিলেন। অবশেষে তার ছেলে তাহের তার বাপের জানাযা পড়ান। তার বাপ তাকে জানাযা পড়ানোর অসিয়ত করেছিল।

যখন খলীফা মু’তায্য এ খবর শুনল তখন ওবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের কাছে শাহী পেশাক ও রাষ্টের কিছু দায়িত্ব দিয়ে লোক পাঠাল। যে এই সুখবর নিয়ে আসল তাকে ওবাইদুল্লাহ পঞ্চাশ হাজার দেরহাম পুরষ্কার দিল।

এ বছর খলিফা মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ কে র্সুরা মান রআ (সামাররা) এলাকা থেকে ওসেত নামক এলাকায় তারপর ওখান থেকে বসরায় নির্বাসিত করলেন।
الْخَوَارِجِ، فَقَصَدَ لَهُ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: بُنْدَارٌ الطَّبَرِيُّ. فِي نَحْوِ ثَلَاثِمِائَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَالْتَقَوْا فِي هَذَا الْيَوْمِ فَاقْتَتَلُوا قِتَالًا شَدِيدًا، فَقُتِلَ مِنَ الْخَوَارِجِ نَحْوٌ مِنْ خَمْسِينَ، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِ بُنْدَارٍ مِائَتَانِ، وَقِيلَ: وَخَمْسُونَ رَجُلًا. وَقُتِلَ بُنْدَارٌ فِي مَنْ قُتِلَ، رَحِمَهُ اللَّهُ. ثُمَّ صَمَدَ مُسَاوِرٌ إِلَى حُلْوَانَ فَقَاتَلَهُ أَهْلُهَا، وَأَعَانَهُمْ حُجَّاجُ أَهْلِ خُرْسَانَ، فَقَتَلَ مُسَاوِرٌ مِنْهُمْ نَحْوًا مِنْ أَرْبَعِمِائَةِ إِنْسَانٍ، قَبَّحَهُ اللَّهُ. وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ جَمَاعَةٌ كَثِيرُونَ أَيْضًا. وَلِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ شَوَّالٍ قُتِلَ وَصِيفٌ التُّرْكِيُّ وَأَرَادَتِ الْعَامَّةُ أَنْ تَنْهَبَ دَارَهُ بِسَامَرَّا وَدُورَ أَوْلَادِهِ، فَلَمْ يُمْكِنْهُمْ ذَلِكَ، وَجَعَلَ الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ مَا كَانَ إِلَيْهِ إِلَى بُغَا الشَّرَابِيِّ. وَفِي لَيْلَةِ أَرْبَعَ عَشْرَةَ مِنْ ذِي الْقَعْدَةِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ خَسَفَ الْقَمَرُ حَتَّى غَابَ أَكْثَرُهُ وَغَرِقَ نُورُهُ، وَعِنْدَ انْتِهَاءِ خُسُوفِهِ مَاتَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نَائِبُ الْعِرَاقِ بِبَغْدَادَ. وَكَانَتْ عِلَّتُهُ قُرُوحًا فِي رَأْسِهِ وَحَلْقِهِ فَذَبَحَتْهُ، وَلَمَّا أُتِيَ بِهِ لِيُصَلَّى عَلَيْهِ اخْتَلَفَ أَخُوهُ عُبَيْدُ اللَّهِ وَابْنُهُ طَاهِرٌ، أَيُّهُمَا يُصَلِّي عَلَيْهِ، وَتَنَازَعَا حَتَّى جُذِبَتِ السُّيُوفُ وَتَرَامَى النَّاسُ بِالْحِجَارَةِ، وَصَاحَتِ الْغَوْغَاءُ: يَا طَاهِرُ، يَا مَنْصُورُ. فَمَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ إِلَى الشَّرْقِيَّةِ وَمَعَهُ الْقُوَّادُ وَأَكَابِرُ النَّاسِ، فَدَخَلَ دَارَهُ وَكَانَ أَخُوهُ قَدْ أَوْصَى إِلَيْهِ. وَحِينَ بَلَغَ الْمُعْتَزَّ مَا وَقَعَ بَعَثَ بِالْخِلَعِ وَالْوِلَايَةِ إِلَى عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ، فَأَطْلَقَ عُبَيْدُ اللَّهِ لِلَّذِي قَدِمَ بِالْخِلَعِ خَمْسِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ. وَفِيهَا نَفَى الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ أَخَاهُ أَبَا أَحْمَدَ مِنْ سُرَّ مَنْ رَأَى إِلَى وَاسِطَ ثُمَّ إِلَى
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৬
অতঃপর তাকে বাগদাদে পাঠিয়ে দেন। তখন তিনি বাগদাদের পূর্বাঞ্চলে দিনার ইবনে আব্দুল্লাহ বাড়িতে অবস্থান করতে থাকেন।

এ সময় আলী ইবনে মু’তাসিম কেও নির্বাসিত করে প্রথমে ওসেত নামক এলাকায় পাঠানো হয়। তারপরে তাকেও বাগদাদে পাঠানো হয়।

জিলকদাহ মাসের শেষে সেমবারের দিন মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর এবং হুসাইন ইবনে আহমাদ আল-কাওকাবী আত-তালী এ দুজনের মাঝে কঠিন যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে হুসাইন পরাজিত হয়। (এই হুসাইনের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল হিজরী ২৫১ সালে কাযবিন নামক এলাকায়।) তিনি যুদ্ধে পরাজয় বরণ করলে মূসা ইবনে বুগা কাযবিন এলাকা দখল করে নেন। হুসাইন কাওকাবী পালিয়ে দায়লাম নামক এলাকায় চলে যান।

ইবনে জারির যারা এ ঘটনায় উপস্থিত ছিল তাদের থেকে বর্ণনা করেন যে, যুদ্ধের সময় হুসাইন কাওকাবী তার সাথিদের কে বললেন চামড়ার তৈরি ঢাল ব্যবহার করতে। তির যা ভেদ করতে পারে না। অপর দিকে মূসা ইবনে বুগা তার সাথিদের বললেন, তাদের কাছে যে পেট্রল আছে তা জমিনে ঢেলে দিতে। আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকতে। যুদ্ধের মাঝে এমন ভাব প্রকাশ করবে যাতে প্রতিপক্ষ মনে করে তারা পরাজিত হয়েছে। আর এমনই করা হল। তখন হুসাইন আল-কাওকাবীর বাহিনী তাদের পিছনে ধাওয়া করল। অতঃপর যখন তারা পেট্রল ঢালা জমিনে পৌছল তখন মূসা ইবনে বুগা ঐ পেট্রলে আগুন জ্বালিয়ে দিতে বললেন। ফলে হুসাইন কাওকাবীর অনেক সঙ্গিরা আগুনে পুড়তে লাগল। আর বাকিরা দ্রুত পালায়ন করতে লাগল। তখন মূসা ইবনে বুগা ও তার বাহিনী তাদের উপর পুনরায় হামলা করেন। তাদের অনেককে হত্যা করেন। আর হুসাইন কাওকাবী পালিয়ে দায়লামে যান। মূসা ইবনে বুগা কাযবিন দখল করে নেন।

এ বছর আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সুলাইমান মানুষদের হজ্জ করান।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :
আবুল আশআস
আহমাদ ইবনে সাঈদ আদ-দারেমী
الْبَصْرَةِ ثُمَّ رُدَّ إِلَى بَغْدَادَ فَأُنْزِلَ فِي الشَّرْقِيَّةِ فِي قَصْرِ دِينَارِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ. وَفِيهَا نَفُيِ عَلِيُّ ابْنُ الْمُعْتَصِمِ إِلَى وَاسِطَ ثُمَّ رُدَّ إِلَى بَغْدَادَ أَيْضًا. وَفِي يَوْمِ الْإِثْنَيْنِ سَلْخَ ذِي الْقَعْدَةِ الْتَقَى مُوسَى بْنُ بُغَا الْكَبِيرِ هُوَ وَالْحُسَيْنُ بْنُ أَحْمَدَ الْكَوْكَبِيُّ الطَّالِبِيُّ الَّذِي خَرَجَ فِي سَنَةِ إِحْدَى وَخَمْسِينَ عِنْدَ قَزْوِينَ فَاقْتَتَلَا قِتَالًا شَدِيدًا، ثُمَّ هُزِمَ الْكَوْكَبِيُّ وَأَخَذَ مُوسَى بْنُ بُغَا قَزْوِينَ وَهَرَبَ الْكَوْكَبِيُّ إِلَى الدَّيْلَمِ. وَذَكَرَ ابْنُ جَرِيرٍ عَنْ بَعْضِ مَنْ حَضَرَ هَذِهِ الْوَقْعَةَ أَنَّ الْكَوْكَبِيَّ حِينَ الْتَقَى أَمَرَ أَصْحَابَهُ أَنْ يَتَتَرَّسُوا بِالْحَجَفِ، وَكَانَتِ السِّهَامُ لَا تَعْمَلُ فِيهِمْ، فَأَمَرَ مُوسَى بْنُ بُغَا أَصْحَابَهُ عِنْدَ ذَلِكَ أَنْ يَطْرَحُوا مَا مَعَهُمْ مِنَ النِّفْطِ بِالْأَرْضِ، ثُمَّ جَاوَلُوهُمْ وَأَرَوْهُمْ أَنَّهُمْ قَدِ انْهَزَمُوا مِنْهُمْ، فَتَبِعَهُمْ أَصْحَابُ الْكَوْكَبِيِّ، فَلَمَّا تَوَسَّطُوا الْأَرْضَ الَّتِي فِيهَا النِّفْطُ أَمَرَ عِنْدَ ذَلِكَ بِإِلْقَاءِ النَّارِ فِيهِ، فَجَعَلَتِ النَّارُ تَحْرِقُ أَصْحَابَ الْكَوْكَبِيِّ، فَفَرُّوا سِرَاعًا هَارِبِينَ، وَكَرَّ عَلَيْهِمْ مُوسَى وَأَصْحَابُهُ فَقَتَلُوا مِنْهُمْ مَقْتَلَةً عَظِيمَةً، وَهَرَبَ الْكَوْكَبِيُّ إِلَى الدَّيْلَمِ، وَتَسَلَّمَ مُوسَى بْنُ بُغَا قَزْوِينَ. وَفِيهَا حَجَّ بِالنَّاسِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سُلَيْمَانَ الزَّيْنَبِيُّ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَمِمَّنْ تُوُفِّيَ مِنَ الْأَعْيَانِ: أَبُو الْأَشْعَثِ. وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৭
হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. এর আলোচনা।

তিনি হলেন সারিয়্যী ইবনে মুগাল্লিস আবুল হাসান আস-সাকতী বাগদাদী। যিনি একজন বড় সুফী বুযুর্গ ছিলেন। হযরত মা’রুফ কারখী রহ. এর ছাত্র ছিলেন। তিনি হুশাইম, আবূ বকর ইবনে আইয়াশ, আলী ইবনে গুরাব, ইয়াহইয়া ইবনে ইয়ামান, ইয়াযিদ ইবনে হারুন আরে অনেক মুহাদ্দীস থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার অনেক ছাত্র ছিল। তারা ভাগিনা জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ, আবুল হাসান আন-নুরী, মুহাম্মাদ ইবনে ফয্ল ইবনে জাবের আস-সাকতী আরো অনেকে। সবাই তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

তার একটা দোকান ছিল যাতে তিনি ব্যাবসা করতেন। এক দিনের ঘটনা : এক বাদি তার দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে বাদির কাছে একটা পাত্র ছিল। পাত্রটা ভেঙ্গে গেল। সে ঐ পাত্রে তার মুনিবের জন্য কিছু কেনার জন্য এসেছিল। তখন পাত্রটা ভাঙ্গার কারণে ঐ বাদি কাঁদছিল। তাকে দেখে সারিয়্যী রহ. তাকে কিছু পয়সা দিলেন। যা দিয়ে সে আরেকটা পাত্র কিনতে পারে। বাদির সাথে তার এ ব্যবহার তার উস্তাদ মা’রুফ রহ. দেখছিলেন। তখন তার উস্তাদ দুআ করলেন যে, আল্লাহ তায়ালা তোমার কাছে দুনিয়া তুচ্ছ করে দিক।

সারিয়্যী রহ. বলেন একদা ঈদের দিন আমি পথ চলছি। হটাৎ মা’রুফ কারখী কে দেখি। তার সাথে একটা খুব গরিব ছোট ছেলে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনার সাথে এ বাচ্চা কেন? তিনি উত্তর দিলেন, দেখলাম কিছু ছেলে আখরোট নিয়ে খেলছে। আর পাশে এ ছেলেটি মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে। আমি তাকে বললাম : তোমার কি হয়েছে? খেলছ না কেন? ছেলেটি উত্তর দিল : আমি এতিম, আমার কোন পয়সা নেই। যা দিয়ে আমি আখরোট কিনে খেলব। তাই আমি তার হাত ধরে নিয়ে আসলাম। তাকে কিছু বীচি জমা করে দিব। যা দিয়ে সে আখরোট কিনতে পারে। ফলে সে আনন্দিত হবে। সারিয়্যী রহ. বলেন, আমি বললাম : আমি কি তাকে কিছু কাপড় কিনে দিব? এবং আখরোট কেনার জন্য কিছু পয়সা দিব? তিনি বললেন তুমি পারবে? আমি বললাম হ্যাঁ পারব।
وَسَرِيٌّ السَّقَطِيُّ. أَحَدُ كِبَارِ مَشَايِخِ أَئِمَّةِ الصُّوفِيَّةِ، وَهُوَ السَّرِيُّ بْنُ الْمُغَلِّسِ أَبُو الْحَسَنِ السَّقَطِيُّ الْبَغْدَادِيُّ، تِلْمِيذُ مَعْرُوفٍ الْكَرْخِيِّ حَدَّثَ عَنْ هُشَيْمٍ، وَأَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، وَعَلِيِّ بْنِ غُرَابٍ، وَيَحْيَى بْنِ يَمَانٍ، وَيَزِيدَ بْنِ هَارُونَ، وَغَيْرِهِمْ. وَعَنْهُ ابْنُ أُخْتِهِ الْجُنَيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَأَبُو الْحَسَنِ النُّورِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ جَابِرٍ السَّقَطِيُّ، وَجَمَاعَةٌ. وَكَانَتْ لَهُ دُكَّانٌ يَتَّجِرُ فِيهَا، فَمَرَّتْ بِهِ جَارِيَةٌ قَدِ انْكَسَرَ إِنَاءٌ كَانَ مَعَهَا تَشْتَرِي فِيهِ شَيْئًا لِسَادَتِهَا، فَجَعَلَتْ تَبْكِي، فَأَعْطَاهَا سَرِيٌّ شَيْئًا تَشْتَرِي بِهِ بَدَلَهُ، فَنَظَرَ مَعْرُوفٌ إِلَيْهِ وَمَا صَنَعَ بِتِلْكَ الْجَارِيَةِ، فَقَالَ لَهُ: بَغَّضَ اللَّهُ إِلَيْكَ الدُّنْيَا. وَقَالَ سَرِيٌّ: مَرَرْتُ فِي يَوْمِ عِيدٍ، فَإِذَا مَعْرُوفٌ وَمَعَهُ صَبِيٌّ صَغِيرٌ شَعِثُ الْحَالِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ فَقَالَ: هَذَا كَانَ وَاقِفًا وَالصِّبْيَانُ يَلْعَبُونَ وَهُوَ مُنْكَسِرٌ، فَقُلْتُ لَهُ: مَا لَكَ لَا تَلْعَبُ؟ فَقَالَ: أَنَا يَتِيمٌ وَلَا شَيْءَ مَعِي أَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا أَلْعَبُ بِهِ. فَأَخَذْتُهُ لِأَجْمَعَ لَهُ نَوًى يَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا يَفْرَحُ بِهِ، فَقُلْتُ: أَلَا أَكْسُوهُ وَأُعْطِيهِ شَيْئًا يَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا؟ فَقَالَ: أَوَتَفْعَلُ؟ فَقُلْتُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৮
অতঃপর বললেন : লও, নিয়ে যাও। তারপর আমার জন্য দুআ করলেন, বললেন : আল্লাহ তায়ালা তোমার অন্তরকে ধনী বানিয়ে দিক। সিরী রহ. বলেন, এরপর থেকে দুনিয়া আমার নিকটে একেবারে তুচ্ছ নগন্য হয়ে গেছে।

সারিয়্যী রহ. এর আরেকটি ঘটনা : তার কাছে কিছু বাদাম ছিল এক ব্যক্তি তা কিনতে চাইল। তাদের মাঝে দরা-দরি হল যে, প্রতি কুর (এক ধরণের পরিমাপপাত্র) বাদাম ৬৩ দিনার। অতঃপর লোকটি বাদাম না কিনেই চলে গেল। তখন হটাৎ বাদামের দাম বেড়ে প্রতি কুর ৯০ দিনার হল। তারপর ঐ লোকটি আবার আসল এবং বলল আমি আপনার থেকে এক কুর বাদাম নিব ৯০ দিনার দিয়ে। সারিয়্যী রহ. বললেন : আপনার সাথে দরা-দরি হয়েছে ৬৩ দিনার। আমি তার থেকে বেশিতে বেচব না। আর লেকটি বলল : আমি ৯০ দিনার দিয়ে কিনব। তিনি বললেন আমাদের মাঝে যে দাম নির্ধরিত হয়েছিল সে দাম ছাড়া বেচব না। লোকটি বলল : ইনসাফ হল বাজারী মূলে অর্থাৎ ৯০ দিনার দিয়েই ক্রয় করা। শেষ পর্যন্ত লোকটি বাদাম না কিনেই চলে গেল।

তার আরেকটি ঘটনা : একদা এক মহিলা সারিয়্যী রহ. এর কাছে আসল। তাকে বলল : আমার ছেলে কে পাহারাদার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমি চাই আপনি কাউকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিন। যাতে আমার ছেলে কে মারা না হয়। এ কথা শুনে তিনি নামাযে দাড়িয়ে গেলেন। দীর্ঘ সময় নামায পড়তে লাগলেন। এ অবস্থা দেখে মহিলা মনে মনে খুব রাগান্বিত হলেন। যখন তিনি নামায শেষ করেন মহিলাটি তখন বলল আল্লাহ ওয়াস্তে আমার ছেলের জন্য কিছু করেন। তিনি বললেন : ঐ সময় থেকে এ পর্যন্ত আপনার ছেলেকে ছাড়ানোর জন্যই চেষ্টা করেছি। সারিয়্যী রহ. এখনোও তার মজলিস থেকে উঠে নাই, এর মধ্যেই অন্য এক মহিলা ঐ মহিলার কাছে আসল এবং বলল : সুসংবাদ গ্রহন কর। তোমার ছেলে কে পুলিশ মুক্তি দিছে। তখন মহিলা খুশি হয়ে চলে গেল।

সারিয়্যী রহ. বলেন : আমি চাই এমন খাদ্য খেতে যা খেলে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোন প্রকার পাকড়াও হবে না। না তাতে আমার উপর কারো অনুগ্রহ থাকবে। কিন্তু আমার ইচ্ছা পুরণ করতে পারিনি।
نَعَمْ. فَقَالَ: خُذْهُ، أَغْنَى اللَّهُ قَلْبَكَ. قَالَ: فَسَوِيَتِ الدُّنْيَا عِنْدِي أَقَلَّ شَيْءٍ. وَكَانَ عِنْدَهُ مَرَّةً لَوْزٌ، فَسَاوَمَهُ رَجُلٌ عَلَى الْكُرِّ بِثَلَاثَةٍ وَسِتِّينَ دِينَارًا، ثُمَّ ذَهَبَ الرَّجُلُ، فَإِذَا اللَّوْزُ يُسَاوِي الْكُرُّ مِنْهُ تِسْعِينَ دِينَارًا، فَقَالَ لَهُ: إِنِّي أَشْتَرِي مِنْكَ الْكُرَّ بِتِسْعِينَ دِينَارًا. فَقَالَ: إِنِّي سَاوَمْتُكُ بِثَلَاثَةٍ وَسِتِّينَ، وَإِنِّي لَا أَبِيعُهُ إِلَّا بِذَلِكَ. فَقَالَ الرَّجُلُ: وَأَنَا أَشْتَرِي مِنْكَ بِتِسْعِينَ. فَقَالَ: لَا أَبِيعُهُ إِلَّا بِمَا سَاوَمْتُكَ عَلَيْهِ. فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنَّ مِنَ النُّصْحِ أَنْ لَا أَشْتَرِيَ مِنْكَ إِلَّا بِتِسْعِينَ دِينَارًا. وَذَهَبَ فَلَمْ يَشْتَرِ مِنْهُ. وَجَاءَتِ امْرَأَةٌ يَوْمًا إِلَى سَرِيٍّ فَقَالَتْ: إِنَّ ابْنِي قَدْ أَخَذَهُ الْحَرَسُ، وَإِنِّي أُحِبُّ أَنْ تَبْعَثَ إِلَى صَاحِبِ الشُّرْطَةِ لِئَلَّا يُضْرَبَ. فَقَامَ فَكَبَّرَ وَطَوَّلَ فِي الصَّلَاةِ وَجَلَعَتِ الْمَرْأَةُ تَحْتَرِقُ فِي نَفْسِهَا، فَلَمَّا انْصَرَفَ مِنَ الصَّلَاةِ قَالَتِ الْمَرْأَةُ: اللَّهَ اللَّهَ فِي وَلَدِي. فَقَالَ: هَاأَنَذَا فِي حَاجَتِكِ. فَمَا قَامَ مِنْ مَجْلِسِهِ حَتَّى جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى تِلْكَ الْمَرْأَةِ فَقَالَتْ: أَبْشِرِي، فَقَدْ أَطْلَقَ الْمُتَوَلِّي وَلَدَكِ. فَانْصَرَفَتْ إِلَيْهِ. وَقَالَ سَرِيٌّ: أَشْتَهِي أَنْ آكُلَ أَكْلَةً لَيْسَ لِلَّهِ عَلَيَّ فِيهَا تَبِعَةٌ، وَلَا
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৯
অন্য বর্ণনায় আছে তিনি বলেন : ত্রিশ বছর ধরে আমার সবজি খাওয়ার আগ্রহ হয়েছে কিন্তু খেতে পারিনি।

সারিয়্যী রহ. বলেন : আমাদের বাজারে একদিন আগুন লাগে। আমার দোকান দেখার জন্য বের হলাম। পথিমধ্যে একজন লেকের সাথে সাক্ষাত হল। সে বলল : সুসংবাদ গ্রহন করুন, আপনার দোকান সম্পূর্ন ভালো আছে। সুখবর শুনে আমি আলহামদুল্লিাহ বললাম। তারপর আমার স্বরণ হল, আমার দোকান ভালো আছে তাই শুকরিয়া আদায় করলাম অথচ অন্যের দোকানের চিন্তা তো করলাম না ! তিনি বলেন, আমার এ ভুলের কারণে ত্রিশ বছর ধরে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করছি।
এ ঘটনা খতীবে বাগদাদী বর্ণনা করেছেন।

সারিয়্যী রহ. বলেন : এক রাতে আমি আমার অজিফা আদায় করছিলাম। অজিফা শেষে আমার পা মেহরাবের দিকে লম্বা করে দিলাম। তখন গায়েব থেকে আওয়াজ শুনলাম, কেউ আমাকে বলছে : হে সারিয়্যী তুমি কি বাদশাদের সামনে এভাবে বসবে? সারিয়্যী রহ. বলেন, আমি তখন আমার পা গুটিয়ে নিলাম। অতঃপর বললাম তোমার ইজ্জতের কসম ! আমার পা আর কখনো লম্বা করব না।

জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ বলেন : হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. এর থেকে আল্লাহ তায়ালার বড় ইবাদাতকারী আমি দেখি নাই। তার বয়স ৯৮ বছর হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যু ব্যধির সময় ছাড়া কখনো তাকে শোয়া দেখিনি।

খতীবে বাগদাদী আবূ নুআইম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি জা’ফর জুলদী থেকে, তিনি জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন যে, জুনাইদ বলেন : একদিন আমি তার অসুস্থতা দেখতে গেলাম। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম : এখন আপনার কেমন লাগছে? উত্তরে তিনি একটি কবিতা আবৃতি করেন। যার অর্থ : আমি আমার অসুস্থতার অভিযোগ আমার ডাক্তারের কাছে কিভাবে করব  ۞  যে অসুস্থতা আমার ডাক্তারের কারণেই হয়েছে।
অতঃপর জুনাইদ বলেন : আমি একটা পাখা নিয়ে তাকে বাতাশ করতে লাগলাম। তখন তিনি বললেন : পাখার বাতাশে ঐ ব্যক্তি কিভাবে ঠান্ডা হবে যা ভিতরে আগুন জ্বলছে। এরপর তিনি নিচের কবিতাগুলি আবৃতি করলেন :
لِأَحَدٍ عَلَيَّ فِيهَا مِنَّةٌ، فَمَا أَجِدُ إِلَى ذَلِكَ سَبِيلًا. وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: إِنِّي لَأَشْتَهِي الْبَقْلَ مِنْ ثَلَاثِينَ سَنَةً، فَمَا أَقْدِرُ عَلَيْهِ. وَعَنِ السَّرِيِّ أَنَّهُ قَالَ: احْتَرَقَ سُوقُنَا، فَقَصَدْتُ الْمَكَانَ الَّذِي فِيهِ دُكَّانِي، فَتَلَقَّانِي رَجُلٌ فَقَالَ: أَبْشِرْ ; فَإِنَّ دُكَّانَكَ قَدْ سَلِمَتْ. فَقُلْتُ: الْحَمْدُ لِلَّهِ. ثُمَّ تَذَكَّرْتُ ذَلِكَ التَّحْمِيدَ، فَأَنَا أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ مُنْذُ ثَلَاثِينَ سَنَةً. رَوَاهَا الْخَطِيبُ. وَقَالَ السَّرِيُّ: صَلَّيْتُ وِرْدِي ذَاتَ لَيْلَةٍ ثُمَّ مَدَدْتُ رِجْلِي فِي الْمِحْرَابِ، فَنُودِيتُ: يَا سَرِيُّ، كَذَا تُجَالِسُ الْمُلُوكَ؟ قَالَ: فَضَمَمْتُ رِجْلِي ثُمَّ قُلْتُ: وَعِزَّتِكَ لَا مَدَدْتُ رِجْلِي أَبَدًا. وَقَالَ الْجُنَيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ: مَا رَأَيْتُ أَعْبَدَ لِلَّهِ مِنَ السَّرِيِّ السَّقَطِيِّ ; أَتَتْ عَلَيْهِ ثَمَانٍ وَتِسْعُونَ سَنَةً مَا رُئِيَ مُضْطَجِعًا إِلَّا فِي عِلَّةِ الْمَوْتِ. وَقَالَ الْخَطِيبُ: عَنْ أَبِي نُعَيْمٍ، عَنْ جَعْفَرٍ الْخُلْدِيِّ، عَنِ الْجُنَيْدِ بْنِ مُحَمَّدٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَيْهِ أَعُودُهُ، فَقُلْتُ: كَيْفَ تَجِدُكَ؟ فَقَالَ: كَيْفَ أَشْكُو إِلَى طَبِيبِي مَا بِي، وَالَّذِي قَدْ أَصَابَنِي مِنْ طَبِيبِي. قَالَ: فَأَخَذْتُ الْمِرْوَحَةَ أَرَوِّحُهُ، فَقَالَ لِي: كَيْفَ يَجِدُ رَوْحَ الْمِرْوَحَةِ مَنْ جَوْفُهُ يَحْتَرِقُ مِنْ دَاخِلٍ؟ ثُمَّ أَنْشَأَ يَقُولُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৯০
অন্তর জ্বলতেছে চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে  ۞  সমস্ত বিপদ জমা হচ্ছে, আর ধৈর্য ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে।
ঐ ব্যক্তি কিভাবে স্থির হবে যার কোন ঘর নেই  ۞  ঐ সমস্ত কাজের কারণে যা নফসের তাড়নায় আগ্রহ অস্থিরাতার মধ্যে করেছে।
হে আল্লাহ যদি আমার ভাগ্যে প্রশান্তি থাকে  ۞  তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত আমাকে প্রশান্তি দান কর।

জুনাইদ বলেন, আমি তাকে বললাম : আমকে কিছু নসিহাত করেন। তিনি বললেন : খারাপ লোকদের সহচার্যে যেও না। আর ভালো লোকদের সহচার্যে থেকে আল্লাহ তায়ালার স্বরণ থেকে গাফেল থেক না।

খতীবে বাগদাদী বর্ণনা করেন, তিনি ৬ ই রমযান ২৫৩ হিজরী সালে সোমবারের দিন ফজরের আযানের পরে ইন্তেকাল করেন। তাকে আসরের পরে শুনিঝিয়্যাহ কবর স্থানে দাফন করা হয়। তার কবর প্রশিদ্ধ সবাই চেনে। তার কবরের পাশে জুনাইদ বাগদাদীর কবর দেয়া হয়।

আবূ ওবাইদা ইবনে হারবাওয়াই থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি স্বপ্নে হযরত সারিয়্যী রহ. কে দেখলাম। আমি তাকে বললাম : আল্লাহ তায়ালা আপনার সাথে কেমন আচারণ করেছে? উত্তরে তিনি বলেন : আল্লাহ তায়ালা আমাকে মাফ করে দিছে। আর আমার জানাযায় যারা উপস্থিত হয়েছিল সবাই কে মাফ করে দিছে। আমি বললাম : আমিও আপনার জানাযায় উপস্থিত হয়েছিলাম, জানাযার নামাযও পড়েছি। আবূ ওবাইদা বলেন : এ কথা শুনে তিনি একটি রেজিষ্টার বের করে দেখলেন। কিন্তু তার মধ্যে আমার নাম পেলেন না। আমি বললাম বাস্তবে আমি আপনার জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। তখন রেজিষ্টরের টিকায় আমার নাম পাওয়া গেল।

ইবনে খিল্লিকান ভিন্ন একটি মত বর্ণনা করেন যে, সারী রহ. ২৫১ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। আর কেউ বলেন ২৫৬ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। সঠিকটা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।
الْقَلْبُ مُحْتَرِقٌ وَالدَّمْعُ مُسْتَبِقٌ ... وَالْكَرْبُ مُجْتَمِعٌ وَالصَّبْرُ مُفْتَرِقُ كَيْفَ الْقَرَارُ عَلَى مَنْ لَا قَرَارَ لَهُ ... مِمَّا جَنَاهُ الْهَوَى وَالشَّوْقُ وَالْقَلَقُ يَا رَبِّ إِنْ كَانَ شَيْءٌ فِيهِ لِي فَرَجٌ ... فَامْنُنْ عَلَيَّ بِهِ مَا دَامَ بِي رَمَقُ قَالَ: وَقُلْتُ لَهُ: أَوْصِنِي. قَالَ: لَا تَصْحَبِ الْأَشْرَارَ، وَلَا تَشْتَغِلْ عَنِ اللَّهِ بِمُجَالَسَةِ الْأَخْيَارِ. وَقَدْ ذَكَرَ الْخَطِيبُ وَفَاتَهُ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ لِسِتٍّ خَلَوْنَ مِنْ رَمَضَانَ سَنَةَ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ بَعْدَ أَذَانِ الْفَجْرِ، وَدُفِنَ بَعْدَ الْعَصْرِ. قَالَ: وَدُفِنَ بِمَقْبَرَةِ الشُّونِيزِيَّةِ، وَقَبْرُهُ ظَاهِرٌ مَعْرُوفٌ، وَإِلَى جَنْبِهِ قَبْرُ الْجُنَيْدِ. وَرُوِيَ عَنِ الْقَاضِي، عَنْ أَبِي عَبُيْدِ بْنِ حَرْبَوَيْهِ قَالَ: رَأَيْتُ سَرِيًّا فِي الْمَنَامِ، فَقُلْتُ: مَا فَعَلَ اللَّهُ بِكَ؟ فَقَالَ: غَفَرَ لِي وَلِكُلِّ مَنْ شَهِدَ جِنَازَتِي. قُلْتُ: فَإِنِّي مِمَّنْ حَضَرَ جِنَازَتَكَ وَصَلَّى عَلَيْكَ. قَالَ: فَأَخْرَجَ دُرْجًا فَنَظَرَ فِيهِ، فَلَمْ يَرَ فِيهِ اسْمِي، فَقُلْتُ: بَلَى، قَدْ حَضَرْتُ، فَإِذَا اسْمِي فِي الْحَاشِيَةِ. وَحَكَى ابْنُ خِلِّكَانَ قَوْلًا ; أَنَّ سَرِيًّا تُوَفِّي سَنَةَ إِحْدَى وَخَمْسِينَ. وَقِيلَ: سَنَةَ سِتٍّ وَخَمْسِينَ. فَاللَّهُ أَعْلَمُ. قَالَ ابْنُ خِلِّكَانَ: وَمِمَّا كَانَ يُنْشِدُهُ السَّرِيُّ، رَحِمَهُ اللَّهُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৯১
ইবনে খিল্লিকান বলেন হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. বেশি বেশি নিচের কবিতাগুলো পড়তেন।
যখন আমি মহাব্বতের দাবী করতাম তখন আমার মহাব্বতের মানুষ বলত তুমি মিথ্যা বলছ  ۞  কেননা তোমার অঙ্গ-প্রতঙ্গে এখনো গোশত আছে।
আর যতক্ষন শরিরে গোশত থাকে ততক্ষন মহব্বতের দাবী করা ভুল  ۞  আর যতক্ষন এমন বেখেয়াল না হবে যে কারো ডাকে সাড়া দিতে পারবে না, ততক্ষন মহব্বতের দাবী করা ঠিক নয়।
إِذَا مَا شَكَوْتُ الْحُبَّ قَالَتْ كَذَبْتَنِي ... فَمَا لِي أَرَى الْأَعْضَاءَ مِنْكَ كَوَاسِيَا فَلَا حُبَّ حَتَى يَلْصَقَ الْجِلْدُ بِالْحَشَا ... وَتَذْهَلَ حَتَى لَا تُجِيبَ الْمُنَادِيَا