রাবেয়া ও রাজিয়া আপন বোন। ছোটবেলায় তাদের মা অসুস্থ থাকায়...
রাবেয়া ও রাজিয়া আপন বোন। ছোটবেলায় তাদের মা অসুস্থ থাকায় রাবেয়া কিছুদিন আমার আম্মুর দুধ পান করেছে। এখন রাজিয়ার সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে। জানতে চাই, এ অবস্থায় আমার জন্য রাজিয়াকে বিয়ে করা বৈধ হবে কি না?
হাঁ, আপনার জন্য রাজিয়াকে বিয়ে করা বৈধ হবে। কেননা প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রাবেয়া আপনার দুধ বোন হলেও রাজিয়া আপনার দুধ বোন নয়। কারণ সে আপনার মায়ের দুধ পান করেনি। তাই রাজিয়াকে বিয়ে করতে কোনো সমস্যা নেই।
-মাবসূত, সারাখসী ৫/১৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭
আমি ছোট থাকা অবস্থায় আমার আব্বা-আম্মার মাঝে কোনো কারণে তালাকের...
আমি ছোট থাকা অবস্থায় আমার আব্বা-আম্মার মাঝে কোনো কারণে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়। আমার নানার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল কিন্তু তারপরও আম্মা ঢাকায় চলে যান এবং বাসা ভাড়া নিয়ে সেলাইয়ের কাজ করেন এবং তা থেকে নিজে উপার্জন করে খান। আর আমি আমার আব্বার কাছে থাকি। এটা প্রায় ১৫ বছর আগে। এখনো আমার আম্মা ঢাকায় থাকেন।
এখন জানার বিষয় হল, আম্মার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব কি আমার উপর বর্তাবে? বা আমি কি খরচ দিতে বাধ্য?
যদি আমি খরচ না দেই তাহলে কি আমাকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে? দয়া করে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
পিতা-মাতার যদি খোরপোষের ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সামর্থ্যবান সন্তানের জন্য পিতামাতার ভরণ-পোষণ ও প্রয়োজনীয় খরচ দেওয়া আবশ্যক। এটা সন্তানের উপর পিতা-মাতার হক। সামর্থ্যবান সন্তান এ হক আদায় না করলে গুনাহগার হবে।
আর পিতামাতা যদি সচ্ছল হন, অভাবী না হন তবে সন্তানের উপর তাদের ভরণ-পোষণের খরচ দেওয়া আবশ্যক নয়।
সুতরাং আপনার মায়ের বৈধ উপার্জন ও সম্পদ থেকে যদি তার প্রয়োজন পূরণ না হয় তবে আপনার সামর্থ্য থাকলে তার প্রয়োজন পরিমাণ খরচ দেওয়া আপনার কর্তব্য হবে।
আর যদি বৈধ উপার্জন থেকে তার প্রয়োজন পূরণ হয়ে যায় তবে তার খরচ দেওয়া আপনার উপর জরুরি নয়।
তবে সর্বাবস্থায় পিতা-মাতার খোঁজ-খবর রাখা, দেখা-সাক্ষাৎ করা, তাদেরকে সন্তুষ্ট রাখা, তাদের সম্ভাব্য খেদমত করা ও সাধ্য অনুযায়ী আরামের ব্যবস্থা করা সন্তানের কর্তব্য। এগুলো সন্তানের দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবির কারণও বটে।
-আল বাহরুর রায়েক ৪/২০৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৬২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৬৪
বছর খানেক হয়ে গেছে খালেদের শ্বশুর মারা যায়। এখন খালেদের...
বছর খানেক হয়ে গেছে খালেদের শ্বশুর মারা যায়। এখন খালেদের বাবা তার শাশুড়িকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। শরীয়তের দৃষ্টিতে তাদের পরস্পরে বিবাহ কি বৈধ হবে?
খালেদের শাশুড়ি যেহেতু তার পিতার মাহরাম নয় তাই তার শাশুড়ির সাথে তার পিতার বিবাহ জায়েয আছে।
-আল ফাতাওয়াল খাইরিয়্যাহ ১/৩৯; ফাতহুল কাদীর ৩/১২০; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১
একটি মেয়ের বিবাহ হয়েছে তার মায়ের সৎ মামার সাথে। সৎ...
একটি মেয়ের বিবাহ হয়েছে তার মায়ের সৎ মামার সাথে। সৎ মামা অর্থাৎ এক নানার ঔরসে ভিন্ন নানির ঔরসজাত ছেলের সাথে বিবাহ বৈধ কি না? কুরআন-হাদীসের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।
মায়ের আপন মামা, সৎ মামা এবং বৈপিত্রেয় মামা সকলেই মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন মাজীদের সূরা নিসার ২৩ নং আয়াতে যাদের সাথে বিবাহ হারাম তাদের আলোচনা রয়েছে।
উক্ত মাহরামের আলোচনায় যে ভগ্নিকন্যা এসেছে তাতে বোনের মেয়ের মেয়েসহ তাদের অধস্তন সকলে অন্তর্ভুক্ত। এতে আপন বোন ও সৎ বোনের মেয়ে এবং এদের অধস্তন সকল কন্যার হুকুম সমান।
তাই ঐ মেয়ের বিবাহ তার মায়ের সৎ মামার সাথে সম্পূর্ণ হারাম হয়েছে। তাদের জন্য অবিলম্বে পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে কায়মনোবাক্যে তাওবা-ইস্তিগফার করা আবশ্যক।
-সূরা নিসা (৪) : ২৩; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬০
কোনো বাচ্চা যদি তার সৎ মায়ের দুধ পান করে তাহলে...
কোনো বাচ্চা যদি তার সৎ মায়ের দুধ পান করে তাহলে কি ঐ বাচ্চার মা তালাক হয়ে যাবে?
শিশুর জন্য সৎ মায়ের দুধ পান করা জায়েয। সৎ মায়ের দুধ পান করার সাথে মায়ের তালাক হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের প্রশ্নই অবান্তর।
আমার এক নিকটাত্মীয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে। তাদের একটি ছেলে ও...
আমার এক নিকটাত্মীয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে। তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। ছেলের বয়স দুই বছর। আর মেয়ের বয়স সাত বছর। প্রশ্ন হল, সন্তানরা কার নিকট থাকবে? দাদী নিজের কাছে রাখতে চায়। এতে সে রাজি নয়। এক্ষেত্রে শরীয়তের সিদ্ধান্ত জানতে চাই।
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে পুত্র সন্তানের সাত বছর ও কন্যা সন্তানের নয় বছর বয়স পর্যন্ত মা-ই তাদের লালন-পালনের অধিক হকদার। এ সময়ে মায়ের সম্মতি ব্যতীত পিতা বা পিতার পক্ষের কারো জন্য সন্তানকে মা থেকে একেবারে নিয়ে আসা জায়েয হবে না। অবশ্য এ সময়ের ভিতর সন্তানদের মাহরাম নয় এমন কারো সাথে যদি তাদের মায়ের বিবাহ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে মায়ের জন্য সন্তানদেরকে নিজের কাছে রাখার অধিকার থাকবে না। এক্ষেত্রে নানী, দাদী, আপন বোন এবং বৈপিত্রেয় বোন, পর্যায়ক্রমে উক্ত সন্তান লালনের হকদার হবে।
-কিতাবুল আছল ১০/৩৪৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪১; ফাতহুল কাদীর ৪/১৮৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৯৫; আলইখতিয়ার ৩/৩০২
আমার আম্মা অসুস্থ থাকার কারণে আমার খালাম্মা শৈশবে আমাকে কিছুদিন...
আমার আম্মা অসুস্থ থাকার কারণে আমার খালাম্মা শৈশবে আমাকে কিছুদিন দুধ পান করিয়েছেন। কয়েক বছর পূর্বে আরেকটি শিশুও কিছুদিন খালাম্মার দুধ পান করেছে। এখন শিশুটির বোনের সঙ্গে আমার বিবাহের আলোচনা চলছে। জানার বিষয় হল, ঐ শিশুটি কি আমার দুধ ভাই হবে? এবং তার বোনকে বিবাহ করা কি আমার জন্য জায়েয হবে?
আপনাকে যে খালা দুধ পান করিয়েছেন তার থেকে যারা দুধ পান করেছে তারা সবাই আপনার দুধ ভাই-বোন। তাই কয়েক বছর পূর্বে যে শিশুটি দুধ পান করেছে সে আপনার দুধ ভাই। তবে এ শিশু আপনার দুধ ভাই হওয়ার কারণে তার বোন আপনার দুধ বোন হয়ে যায়নি। সে আপনার মাহরাম নয়। তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৬, ৩/৪০০; মাবসূত, সারাখসী ৫/১৩৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৩১৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩১৭
আমাদের দেশের বিবাহ-শাদীতে সাধারণত যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তা...
আমাদের দেশের বিবাহ-শাদীতে সাধারণত যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তা হল, প্রথমে কনে পক্ষের কোনো একজন মুরব্বী কনের কাছ থেকে ইয্ন (বিয়ের সম্মতি) নিয়ে আসে। এরপর (ভর মজলিসে) বরের কাছে তা পেশ করা হয় এবং বর কবুল করলে বিবাহ সম্পন্ন হয়। জানার বিষয় হল, কনের কাছ থেকে ইয্ন নেওয়ার সময় সাক্ষীদের উপস্থিতি জরুরী কি না?
পাত্রী থেকে বিবাহের সম্মতি নেওয়াকে ‘ইযন’ (বিয়ের সম্মতি) বলে। এই ‘ইযন’ তথা সম্মতি গ্রহণের জন্য সাক্ষী থাকা জরুরী নয়। তবে বিবাহের ইজাব-কবুলের সময় সাক্ষী থাকা জরুরি। সাক্ষী ছাড়া বিবাহ সহীহ হবে না।
Ñবাদায়েউস সানায়ে ২/৫২৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৯; রদ্দুল মুহতার ৩/২১
এক মেয়ে ও এক ছেলের মাঝে সম্পর্ক ছিল। মা জানতে...
এক মেয়ে ও এক ছেলের মাঝে সম্পর্ক ছিল। মা জানতে পেরে মেয়েকে বিবাহ দিয়েছে। জানার বিষয় হল,বাবা জীবিত থাকা সত্ত্বেও বাবার অনুমতি ছাড়া এই বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে কি না?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মেয়েটি বিবাহের সময় সাবালিকা হয়ে থাকলে তার ঐ বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে। কেননা সাবালিকা মেয়ের বিবাহ বাবার অনুমতি ছাড়াও হয়ে যায়। তবে বাবার সম্মতি ছাড়া বিয়ে দেওয়া অন্যায় হয়েছে। আর মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্কা না হলে বাবার সম্মতি ছাড়া বিবাহ সম্পন্ন হয় না।
প্রকাশ থাকে যে, বেগানা নারী-পুরুষের পরস্পর সম্পর্ক সম্পূর্ণ অবৈধ ও গুনাহ। তাদের দেখা-সাক্ষাত ইত্যাদি সবই অবৈধ। বিবাহের উদ্দেশ্যেও কারো সাথে এমন সম্পর্ক গড়া বৈধ নয়। এটা দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য ক্ষতির কারণ আরো প্রকাশ থাকে যে, সাবালিকা মেয়ের বিবাহ পিতার অনুমতি ছাড়া যদিও সহীহ হয়ে যায় তবে তা সঠিক পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, অভিভাবকের অনুমতিক্রমেই বিবাহ করা এবং এব্যাপারে অভিভাবকের পরামর্শকে নিজের কল্যাণ মনে করে মেনে নেওয়া। আর অভিভাবকদেরও দায়িত্ব হল, মেয়ের স্বতঃস্ফূর্ত অনুমতি ছাড়া এককভাবে নিজ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিবাহ না দিয়ে দেওয়া বরং এ ব্যাপারে মেয়ের মতামতের মূল্যায়ন করা।
Ñআলবাহরুর রায়েক ৩/১০৯; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৩/১৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৫৬
সালামবাদ জনাব, আমাদের গ্রামের এক মেয়ে তার পিতার সৎ চাচা...
সালামবাদ জনাব, আমাদের গ্রামের এক মেয়ে তার পিতার সৎ চাচা অর্থাৎ সৎ দাদার সাথে বিবাহের কথাবার্তা চলছে। তাদের বয়সের পার্থক্যও খুব বেশি নয়। এখন আমার জানার বিষয় হলো, তাদের বিবাহ সহীহ হবে কি না?
না, তাদের পরস্পরের বিবাহ সহীহ নয়। কেননা সৎ দাদা অর্থাৎ বৈমাত্রেয় দাদা হোক বা বৈপিত্রেয় দাদা উভয়ই মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। আর মাহরামের সাথে বিবাহ সম্পূর্ণ হারাম। কুরআন মাজীদের সূরা নিসার ২৩ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন : (তরজমা) ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকন্যা, ভগ্নি কন্যা...।’
উক্ত মাহরামের আলোচনায় যে ভ্রাতৃকন্যা এসেছে তাতে ভাইয়ের ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়েসহ তাদের অধস্তন সকলে অন্তর্ভুক্ত। এতে আপন ভাইয়ের মেয়ে এবং বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে এবং বৈমাত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে এবং এদের অধস্তন সকল কন্যার হুকুম সমান।
Ñআহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১২৩; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬০; ফাতহুল কাদীর ৩/১১৮
আমি কি আমার পিতার আপন মামাতো বোনকে বিবাহ করতে পারব?...
আমি কি আমার পিতার আপন মামাতো বোনকে বিবাহ করতে পারব? সে বয়সে আমার ছোট। মাসআলাটি জানালে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ থাকব।
হাঁ, পিতার মামাতো বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কেননা পিতার মামাতো বোন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত নয়।
-সূরা নিসা (৪) : ২৪; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩১
বোনের ছেলে খালার দুধ পান করেছে এবং ঐ খালার মেয়ের...
বোনের ছেলে খালার দুধ পান করেছে এবং ঐ খালার মেয়ের সাথে দুধ পানকারীর বিবাহ হয়েছে। তাদের বিবাহ বৈধ হয়েছে কি না?
খালার মেয়ের সাথে ঐ ছেলেটির বিবাহ সহীহ হয়নি। কেননা ছেলেটি ঐ খালার দুধ পান করার দ্বারা তার সকল সন্তানাদি এই ছেলের দুধ ভাই-বোন হয়ে গেছে। তাই ঐ খালার কোনো মেয়ের সাথে ছেলেটির বিবাহ জায়েয হবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ مِنَ الرَّضَاعَةِ.
(তরজমা) তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে ঐ সকল মাতাগণ, যারা তোমাদের দুধ পান করিয়েছে এবং (হারাম করা হয়েছে) তোমাদের দুধবোনদের। -সূরা নিসা (৪) : ২৩
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের এখনই পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি এবং এতদিন অবৈধভাবে একসাথে থাকার কারণে উভয়কেই আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, দুধ ভাই-বোনদের মাঝে বিবাহ যে হারাম তা সুস্পষ্ট বিষয়। শরীয়তের কোনো হুকুম অজানা থাকলে বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নেওয়া আবশ্যক। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে না জেনেই তাদের বিবাহ-শাদি দিয়ে দেওয়া অন্যায় হয়েছে।
-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৪৪; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৪৬; শরহুল মুসলিম, নববী ১/৪৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২২; রদ্দুল মুহতার ৩/২১৩
আমার খালাতো বোনের সাথে আমার বিয়ের কথাবার্তা বিগত এক বছর...
আমার খালাতো বোনের সাথে আমার বিয়ের কথাবার্তা বিগত এক বছর যাবৎ চলছে। এখন আমার মা বলছেন, আমি তাকে দুধ পান করিয়েছি। এ ব্যাপারে কোনো পুরুষ সাক্ষী নেই। সুতরাং আমি জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার জন্য এই বিয়ে বৈধ হবে কি না? কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দুধ পান করার ব্যাপারে কোনো পুরুষ সাক্ষী না থাকলেও আপনার মা যেহেতু ঐ মেয়েকে দুধ পান করানোর কথা বলেছেন এবং এখনো মেয়েটির সাথে আপনার বিবাহ হয়নি তাই সতর্কতামূলক ঐ মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়াই আপনার কর্তব্য।
-তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৬৪৪; তানকীহুল ফাতাওয়াল হামীদিয়া ১/৩৪; মিনহাতুল খালেক আলাল বাহরির রায়েক ৩/২৩২; মাবসূত, সারাখসী ৫/১৩৮
নওশীনের মা ও মাহরোস আহসানের মা সহোদর বোন। নওশীনের বয়স...
নওশীনের মা ও মাহরোস আহসানের মা সহোদর বোন। নওশীনের বয়স ৬মাস কালে তার মা অসুস্থ হওয়াতে তার খালার (মাহরোস আহসানের মায়ের) দুধ পান করে। আমাদের জানামতে নওশীন ও মাহরোস আহসানের মধ্যে বিবাহ বৈধ নয়।
জানার বিষয় হল, মাহরোস আহসানের সাথে নওশীনের ছোট বোন নোভার বিবাহ হতে পারবে কি না? নোভা তো মাহরোস আহসানের মার দুধ পান করেনি।
মাহরোস আহসান ও নোভার মধ্যে বিয়ে হওয়া জায়েয ও নাজায়েয নিয়ে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে বিধায় বিষয়টি বিস্তারিতভাবে দলীলাদি দিয়ে সমাধান দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নোভা যেহেতু মাহরোস আহসানের মায়ের দুধ পান করেনি তাই তারা একে অন্যের দুধ সম্পর্কের মাহরাম নয়। বোন দুধ পান করার কারণে নোভার সাথে দুধ সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন সৃষ্টি হয়নি।
সুতরাং মাহরোস আহসানের সাথে নোভার বিবাহ জায়েয হবে।
Ñবাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; আল মাবসূত ইমাম সারাখসী ৫/১৩৭
গত এক মাস আগে আমার এক আত্মীয়ের বিবাহ হয়। তারা...
গত এক মাস আগে আমার এক আত্মীয়ের বিবাহ হয়। তারা ওলিমার আয়োজন করে এক কমিউনিটি সেন্টারে। তার বিবাহের দাওয়াত পেয়ে আমি ও আমার এক চাচাতো ভাই তাতে অংশগ্রহণ করি। যাওয়ার পর দেখি যে, সেখানে গান-বাজনাসহ আরো বিভিন্ন ধরনের গুনাহের কাজ চলছে। তখন আমরা দুজন সেন্টারের এক কোণায় বসে থাকি। পরে খানা খেয়ে ফিরে আসি।
এখন জানার বিষয় হল, শরীয়তে ওলিমার দাওয়াত কবুল করার হুকুম কী? উল্লেখিত পরিস্থিতিতে দাওয়াত কবুল করা সম্পর্কে শরীয়ত কী বলে?
সাধারণ অবস্থায় ওলিমার দাওয়াত গ্রহণ করা সুন্নত। হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রা. থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ নিজের ভাইকে দাওয়াত দিলে সে যেন তা কবুল করে। ওলিমার দাওয়াত হোক বা অন্য কোনো দাওয়াত। -সহীহ মুসলিম,হাদীস ১৪২৯
তবে আজকাল অধিকাংশ বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও বেপর্দা ব্যাপক। তাই এ ধরনের দাওয়াতে অংশগ্রহণ না করাই কর্তব্য।
তবে দাওয়াতকারী যদি এমন নিকটাত্মীয় হয় যে, তার দাওয়াতে অংশগ্রহণ না করলে সে অধিক মনক্ষুণœ হবে বা আত্মীয়তা সম্পর্ক নষ্ট হবে সেক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীর জন্য যদি গুনাহের কাজ থেকে প্রতিবাদ করা সম্ভব হয় তাহলে প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে তাতে অংশগ্রহণ করা যাবে। কিন্তু প্রতিবাদ করা সম্ভব না হলে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। এক্ষেত্রে নিজ থেকে আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবে।
-হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৮/৪৪৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৪৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৩
কারীমার ৫ ছেলে। ফাতেমার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ফাতেমার...
কারীমার ৫ ছেলে। ফাতেমার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ফাতেমার বড় মেয়ে বুশরা কারীমার দুধ পান করেছে। এখন জানার বিষয় হল, কারীমার বড় ছেলের সাথে বুশরার বিবাহ শুদ্ধ হবে কি না? আর ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফার সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ বৈধ হবে কি না?
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ফাতেমার পরিবারের বড় মেয়ে বুশরা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেছে তাই কারীমা তার দুধ মা হয়ে গেছে। তার সকল ছেলে বুশরার দুধ ভাই ও মাহরাম।
কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ ... وَأَخَوَاتُكُمْ مِنَ الرَّضَاعَةِ
(তরজমা) তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা ... তোমাদের দুধ বোন। -সূরা নিসা ৪ : ২৩
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বর্ণনা করেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, দুধ পানের দ্বারা ঐ সব সম্পর্ক হারাম হয়ে যায়,যা বংশের কারণে হারাম হয়। -সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬
সুতরাং ফাতেমার বড় মেয়ের সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ জায়েয হবে না।
তবে ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেনি তাই কারীমার ছেলেরা তার মাহরাম নয়। তাই কারীমার যে কোনো ছেলের সাথে তার বিবাহ বৈধ।
-সূরা নিসা ৪ : ২৩;তাফসীরে কুরতুবী ৫/৭৪;তাফসীরে রাযী ১০/৩০;সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬;মুসনাদে আহমদ,হাদীস : ২৪১২;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৫;বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৬,৩/৪০০;আলমাবসূত,সারাখসী ৪/১৯৯, ৫/১৩৭;আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭
এক ছেলে এবং এক মেয়ে কাজি অফিসে গিয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর...
এক ছেলে এবং এক মেয়ে কাজি অফিসে গিয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর করে বিবাহ করে নেয়। কিন্তু তারা মৌখিক ইজাব-কবুল করেনি। এ সময় তাদের সাথে তাদের চারজন বন্ধু-বান্ধবও ছিল। তিন মাস পর পারিবারিকভাবে তাদের বিবাহের অনুষ্ঠান হয়। তাদের এক আত্মীয় বললেন, এদের বিয়ে তো সহীহ হয়নি। নতুন করে কাজি ডেকে বিয়ে পড়াতে হবে। আর এখনই বিয়ে করানো যাবে না। বরং কয়েকমাস পরস্পর পৃথক থাকবে এরপর ঐ মেয়ের ইদ্দত শেষ হওয়ার পর বিবাহ হবে।
জানার বিষয় হল, এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কি? আর পূর্বের বিয়ে সহীহ না হওয়ার কারণ কী?
তাদের ঐ বিবাহ সহীহ হয়নি। বিবাহ সংঘটিত হওয়ার জন্য দুজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ কিংবা একজন পুরুষ ও দুজন নারীর সামনে মৌখিকভাবে ইজাব-কবুল করা শর্ত। মৌখিকভাবে ইজাব-কবুল না করে শুধু লিখিতভাবে ইজাব-কবুল করলে বিবাহ সংঘটিত হয় না। তাই শুধু কাবিন নামায় স্বাক্ষরের দ্বারা তাদের ঐ বিবাহ সহীহ হয়নি। এতদিন তাদের একত্রে থাকা অবৈধ হয়েছে।
এখন যদি তারা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তাহলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মৌখিক ইজাব-কবুলের মাধ্যমে বিবাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের মাঝে বিবাহের জন্য ইদ্দত পালন করা লাগবে না। বরং যে কোনো মুহূর্তে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।
-দুরারুল হুককাম ফী শরহি গুরারিল আহকাম ১/৩২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭০, ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ৩/১০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪৮৫
বিয়ের ক্ষেত্রে সাক্ষীর প্রয়োজন আছে এটা আমাদের জানা আছে। কিন্তু...
বিয়ের ক্ষেত্রে সাক্ষীর প্রয়োজন আছে এটা আমাদের জানা আছে। কিন্তু সাধারণ মহলে দেখা যায়, মেয়ের অনুমতি (ইযিন) নেওয়ার জন্যও দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতিকে জরুরি ভাবা হয়। জানতে চাই, ইযন নেওয়ার সময় কি সাক্ষীর প্রয়োজন আছে?
ওকিল যদি পিতা বা ভাই হয় তাহলেও কি সাক্ষীর প্রয়োজন হবে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।
কনে থেকে বিবাহের ইযন বা সম্মতি গ্রহণের জন্য সাক্ষী জরুরি নয়। তবে সাক্ষী রাখা ভালো। আর সাক্ষী রাখতে চাইলে মেয়ের মাহরাম থেকেই হতে হবে। গায়রে মাহরাম পুরুষ যেন ইযন নেওয়ার জন্য মেয়ের সামনে না যায়-এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
-আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৯; রদ্দুল মুহতার ৩/২১
রফিককে আমার চাচি কিছুদিন দুধ পান করিয়েছিলেন। এখন রফিকের বোনের...
রফিককে আমার চাচি কিছুদিন দুধ পান করিয়েছিলেন। এখন রফিকের বোনের সাথে আমার চাচাতো ভাইয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে। প্রশ্ন হল, আমার চাচাতো ভাই কি ঐ মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে?
হ্যাঁ, রফিকের বোনের সাথে আপনার চাচাতো ভাইয়ের বিবাহ সহীহ হবে। কারণ রফিক আপনার চাচীর দুধ পান করার দ্বারা তার বোনের সাথে আপনার চাচাত ভাইয়ের দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি।
-আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৫; সহীহ বুখারী ১/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; হেদায়া ২/৩৫১
সাজ্জাদ সাহেব সরকারি চাকুরিজীবী এক ছেলের সাথে তার মেয়ে বুশরার...
সাজ্জাদ সাহেব সরকারি চাকুরিজীবী এক ছেলের সাথে তার মেয়ে বুশরার বিয়ে ঠিক করেছেন। কিন্তু মেয়ে বলল, আমি এ বিয়ে করব না। সাজ্জাদ সাহেব মেয়ের কথা শুনে বললেন, তুমি যদি এ বিয়েতে রাযি না হও তাহলে আমার মরামুখ দেখবে। মেয়েটি বাবার এ কথা শুনে বিয়েতে রাযি হয়। সাজ্জাদ সাহেব মেয়েকে ঐ ছেলের সাথে বিয়ে দেন। মেয়েটি এখন ঐ ছেলের সংসার করছে। প্রশ্ন হল, সাজ্জাদ সাহেব তো মেয়েকে এক ধরনের জোর করেই বিয়ে দিলেন। এভাবে জোর করে বিয়ে দেওয়ার কারণে কি উক্ত বিবাহ সহীহ হয়েছে? প্রমাণাদির আলোকে জানালে উপকৃত হব।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু মেয়ে শেষ পর্যন্ত বিয়েতে রাযি হয়ে গিয়েছিল তাই উক্ত বিবাহ সহীহ হয়েছে। তবে পিতার জন্য এভাবে মেয়ের পছন্দের বাইরে পাত্রকে চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। অভিভাবকদের কর্তব্য হল, বিয়েতে ছেলে-মেয়ের মতামতেরও মূল্যায়ন করা। আর মেয়েদেরও কর্তব্য হল, পিতামাতা তাদের জন্য উপযুক্ত পাত্র নির্বাচন করলে অমত না করে তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নেওয়া।
হাদীস শরীফে এসেছে, একজন নারী রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা তার ভাতিজার সাথে আমার বিয়ে দিয়েছেন, (অথচ বিষয়টিতে আমি রাযি নই) তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি মেয়েটির ইচ্ছার উপর ছেড়ে দিলেন। তখন মেয়েটি বলল, আমার পিতার এ কাজকে আমি সমর্থন করলাম। কিন্তু আমি তা এজন্য করেছি যে, যাতে করে মুসলিম নারীরা অবগত হয় যে, (তাদেরকে তাদের অমতে বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে) তাদের পিতাদের কোনো অধিকার নেই।
-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৮৭৪ (হাদীসটির সনদ সহীহ); হাশিয়াতুশ শিলবী ২/৪৯৫; রদ্দুল মুহতার ৩/২১; ফাতাওয়া আলওয়ালওয়ালিজিয়াহ ১/৩১১
আমি মাসিক একটি পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগে পেয়েছি যে, নানীর সৎ...
আমি মাসিক একটি পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগে পেয়েছি যে, নানীর সৎ বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে একথাটি সঠিক নয়। তাই আমি আপনাদের নিকট এর সঠিক সমাধান জানতে চাই।
পত্রিকার ঐ বক্তব্যটি ঠিক নয়। নানীর (বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয়) সৎ বোন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তার সাথে বিবাহ হারাম। কুরআন মজীদে যে চৌদ্দ শ্রেণীর মহিলার সাথে বিবাহ হারাম বলা হয়েছে। এর মধ্যে এক শ্রেণী হল ‘খালা’। নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থসমূহে ও ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবে রয়েছে যে, উক্ত আয়াতে খালা দ্বারা যেমনিভাবে নিজের আপন ও সৎ (বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয়) খালা উদ্দেশ্য। তেমনিভাবে মার আপন ও সৎ খালাও এর অন্তর্ভুক্ত।
এছাড়া এ বিষয়টি সকল ইমাম ও ফকীহগণের ইজমা দ্বারাও প্রমাণিত।
-তাফসীর ইবনে আতিয়্যাহ ৪/৬৯; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; মাআরিফুল কুরআন ২/৩৫৬; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৯/৫১৫; আলমাজমূ ১৭/৩১৪; তুহফাতুল মুহতাজ ৯/২১৮; আলমুহাল্লা ৯/১৩১; আলইকনা ফী মাসাইলিল ইজমা ২/৬১; মারাতিবুল ইজমা ১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩০; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩
বড় ভাইয়ের বিয়ের জন্য প্রস্তাব এসেছে। ছোট ভাই বা ভগ্নিপতি...
বড় ভাইয়ের বিয়ের জন্য প্রস্তাব এসেছে। ছোট ভাই বা ভগ্নিপতি বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে চায়। তারা কি পাত্রীকে দেখতে পারবে? পাত্র পক্ষের পুরুষদের মধ্যে কে কে পাত্রী দেখতে পারবে?
পাত্রপক্ষের কোনো পুরুষ পাত্রীকে দেখতে পারবে না। প্রয়োজনে পাত্রের মহিলা আত্মীয়দের দিয়ে পাত্রী দেখিয়ে নিতে পারবে।
সুতরাং পাত্রের ভাই-ভগ্নিপতি পাত্রী দেখতে পারবে না। এমনকি বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার আগে পাত্রের পিতার জন্যও মেয়েকে দেখা জায়েয নয়।
-সূরা নূর : ৩০-৩১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৩৪২৪; রদ্দুল মুহতার ৫/২৩৭; রওজাতুত তালেবীন ৭/২০
আমার ছোট ভাইয়ের বয়স যখন ছয় মাস তখন আমার মা...
আমার ছোট ভাইয়ের বয়স যখন ছয় মাস তখন আমার মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকদিন যাবত খানাপিনা গ্রহণ করতে পারেননি। সে সময় মেঝো খালা আমার ছোট ভাইকে দুধ পান করিয়েছেন। প্রশ্ন হল, ঐ খালার মেয়ের সঙ্গে আমার বড় ভাইয়ের বিবাহ জায়েয হবে কি?
হ্যাঁ, আপনার বড় ভাইয়ের জন্য ঐ মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয। ছোট ভাই খালার দুধ পান করারদ্বারা বড় ভাইয়ের সাথে দুধ সম্পর্ক স্থাপন হয়নি।
-আলমাবসূত, সারাখসী ৫/১৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩১৭
সৎমায়ের আপন বোনকে (খালাকে) বিবাহ করা জায়েয আছে কি?
সৎমায়ের আপন বোনকে (খালাকে) বিবাহ করা জায়েয আছে কি?
হ্যাঁ, সৎ মায়ের বোনকে বিবাহ করা জায়েয আছে। কেননা, তারা পরস্পর মাহরাম নয়।
-সূরা নিসা : ৩৪; তাফসীরে তাবারী ৪/১২; ইমদাদুল আহকাম ২/২৪৭; মাজমুআতুল ফাতাওয়া লাখনভী ২/২৩
দুইজন ছেলে-মেয়ে পিতা-মাতার অগোচরে কাজি অফিসে গিয়ে নিকাহনামায় স্বাক্ষর করেছে।...
দুইজন ছেলে-মেয়ে পিতা-মাতার অগোচরে কাজি অফিসে গিয়ে নিকাহনামায় স্বাক্ষর করেছে। তাদের দু’জন বন্ধুও ঐ সময় উপস্থিত ছিল তবে তারা মুখে ইজাব-কবুল করেনি। তাদের এ বিয়ে কি সহীহ হয়েছে? জানালে খুশি হব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের বিয়ে হয়নি। কেননা, বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার জন্য মৌখিকভাবে ইজাব-কবুল করা শর্ত, শুধু নিকাহনামায় স্বাক্ষর করার দ্বারা বিয়ে হয় না।
-আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭০; রদ্দুল মুহতার ৩/১২
মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়ে যাবে?
মনে মনে তালাক দিলে কি তালাক হয়ে যাবে?
মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে তালাক দিলে তা কার্যকর হয় না। তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য লিখা বা মুখে উচ্চারণ করা জরুরি।
সহীহ মুসলিম ১/৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৫৭
(ক) মুহাররম মাস সম্মানিত এবং এই মাসে যেহেতু হযরত হুসাইন...
(ক) মুহাররম মাস সম্মানিত এবং এই মাসে যেহেতু হযরত হুসাইন রা. শহীদ হয়েছেন তাই এই মাসে বিবাহ-শাদি করাকে কুলক্ষুণে মনে করা হয়। এ কথা কি ঠিক?
(খ) ১০ মুহাররম এক শ্রেণীর লোক হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদাতের শোক পালনার্থে তাজিয়া মিছিল বের করে। ধারণা করা হয়, এই টং-এ হযরত হুসাইন রা.-এর রূহ সমাসীন থাকেন। তার কবরের আকৃতি থাকে। শোক মিছিলের সামনে তাজিয়া টং থাকে। এর পাদদেশে নযর-নিয়ায পেশ করা হয় এবং এর সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকে ইত্যাদি। এসব কর্মকাণ্ড শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন?
(ক) না, একথা ঠিক নয়। এই বিশ্বাস রাখা এক ধরনের শিরক। হাদীস শরীফে এসেছে, কুলক্ষুণে বিশ্বাসের কোনো বাস্তবতা নেই। অপর এক হাদীসে আছে, কুলক্ষুণে শিরক।-সুনানে আবু দাউদ, হা. ৩৯০৪;মুসনাদে আহমাদ ১/৩৮৯
সুতরাং মুহাররম মাসে বিয়েশাদি করতে কোনো অসুবিধা নেই। উপরন্তু বহু হাদীসের ভাষ্যমতে এই মাস বরকতপূর্ণ ও মহিমান্বিত।
সহীহ মুসলিম ১/৩৬৮; জামে তিরমিযী ১/১২৫৭
(খ) ‘তাজিয়া’ সম্পূর্ণ শিরকী কাজ। হযরত হুসাইন রা.-এর রূহকে হাযির মনে করা, সেখানে নযর-নিয়ায পেশ করা, হাত জোড় করে দাঁড়ানো প্রত্যেকটি কাজই শিরক। এছাড়া এই দিনে শোক মিছিল বের করা,হাইহুতাশ করা, বুক চাপড়ানো ইত্যাদিও সম্পূর্ণ মনগড়া এবং ভিত্তিহীন, যা বিদআত।
ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/৩৩২, ৩৩৬; আহসানুল ফাতাওয়া ১/৩৯৩
এক চাচাত ভাইয়ের ছেলের ছেলে অপর চাচাত ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে...
এক চাচাত ভাইয়ের ছেলের ছেলে অপর চাচাত ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করেছে। কুরআন, হাদীস ও ফিকহে ইসলামীর আলোকে এ বিয়ে কি শুদ্ধ হয়েছে?
হ্যাঁ, তাদের বিবাহ সহীহ হয়েছে। কারণ তারা পরস্পর মাহরাম নয়।
সূরা নিসা : ২৪; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৭১৫; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১৩৯; তাফসীরে রুহুল মাআনী ৫/৪; সূরাতুল আহযাব : ৫০;সুনানে নাসাঈ ২/৫৮; বাদায়েউ স সানায়ে ২/৫৩১; ফাতহুল কাদীর ৩/১১৭; তাফসীরে মাযহারী ২/৫৬
...
...
আপনার প্রশ্নের উত্ত প্রদানের জন্য আপনার প্রথম বিবাহের কাবিননামা ও তালাকনামা দেখতে হবে। এগুলোর অনুলিপি পাঠালে উত্তর দেওয়া যাবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে কোনো ফোন নাম্বার ও পূর্ণ ঠিকানা দিন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মাটির তৈরি না নূরের? দয়া...
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মাটির তৈরি না নূরের? দয়া করে বিস্তারিত দলীলসহ জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।
হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন সত্ত্বা হিসাবে মানব-সমপ্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তিনি শ্রেষ্ঠ মানব ও সমগ্র মানব-জাতির সরদার।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, বলুন, আমি তোমাদের মতোই একজন মানুষ। আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, যে যেন সৎ কর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার ইবাদতে কাউকে শরীক না করে।-সূরা কাহাফ,: ১১০
স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি কিয়ামতের দিন আদম সন্তানদের সর্দার হব।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২২৭৮
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্ত্বা হিসাবে যেমন একজন পূর্ণ মানব তেমনি হেদায়েত ও নবুওয়তের নূরের ধারক হিসেবে তিনি বিশ্বমানবতার জন্য পরিপূর্ণ নূর ছিলেন। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব হয়েও নূর। আর এ দুয়ের মাঝে কোনো বৈপরিত্য নেই। কুরআন মজীদ ও হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, হে নবী আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি) আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারীরূপে ও উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।-সূরা আহযাব : ৪৬
আর মানব সৃষ্টির সম্পর্কে কুরআন মজীদে এসেছে, আল্লাহ তাআলা আদম আ.কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তাঁর বংশধরের প্রত্যেককেই এক ফোটা পানি থেকে পয়দা করেছেন। সুতরাং আদম সন্তান হিসাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সৃষ্টিও সেভাবে হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তিনিই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি দ্বারা এরপর শুক্রবিন্দু দ্বারা। এরপর জমাট রক্ত দ্বারা। এরপর তোমাদের বের করেন শিশুরূপে। এরপর তোমরা যৌবনে পদার্পণ কর। তারপর বার্ধক্যে উপনীত হও।-সূরা মুমিন : ৬৭
স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বিষয়টির স্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। হযরত ওয়াসিলা ইবনে আসকা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ইসমাঈল আ.-এর বংশধর থেকে কিনানাকে মনোনীত করেছেন। এরপর কিনানার বংশধর থেকে কুরাইশকে মনোনীত করেছেন এং কুরাইশের বংশধর থেকে বনী হাশিমকে মনোনীত করেছেন। আর বনী হাশিম থেকে আমাকে মনোনীত করেছেন।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২২৭৬
আবু জাফর বাকির রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার জন্ম বিবাহের মাধ্যমে হয়েছে। আদম থেকে নিয়ে (আমার পিতামাতা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে আমার বংশ পরম্পরা বিবাহের মাধ্যমে চলে এসেছে।) জাহেলিয়াতের কোনো নাজায়েয পদ্ধতি আমাকে স্পর্শ করেনি। আমার জন্ম একমাত্র পবিত্র তরীকায় হয়েছে।-তাবাকাতে ইবনে সা’দ ১/২৬; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭/৩০৩
সুতরাং কুরআনের ভাষ্য ও হাদীসের বর্ণনার আলোকে প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানব এবং সর্বোত্তম মানব। তিনি সকল সৃষ্টির সেরা ব্যক্তি ও নবীকুলের সরদার।
খালাত বা ফুপাত বোনের মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয আছে কি?
খালাত বা ফুপাত বোনের মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয আছে কি?
জ্বী, খালাত বা ফুফাত বোনের মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয।
সূরা নিসা : ২৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০
আমার বড় খালা কুরআন মজীদ হিফয করেছিলেন। বিয়ের পর সাংসারিক...
আমার বড় খালা কুরআন মজীদ হিফয করেছিলেন। বিয়ের পর সাংসারিক জীবনের ব্যস্ততা ও বিভিন্ন ঝামেলার কারণে কুরআন মজীদের তেলাওয়াত ও চর্চা কম হওয়ায় তিনি এখন হিফয প্রায় ভুলেই গেছেন। ৩০তম পারাটিও ভালোভাবে শুনাতে পারেন না। হিফয করে ভুলে গেলে হাদীস শরীফে খুব ভয়াবহ শাস্তির কথা এসেছে। তাই আমার খালাজান খুব চিন্তিত। এ বিষয়ের হাদীস ব্যাখ্যাসহ জানতে চাই এবং এ অনুযায়ী তার করণীয় কী তাও বলবেন।
এ বিষয়ে যে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে তা হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) যে ব্যক্তি কুরআন মজীদ পড়ল অতঃপর তা ভুলে গেল। কিয়মতের দিন সে কুষ্ঠরোগী হয়ে আল্লাহ তাআলার সামনে উপস্থিত হবে। (সুনানে আবু দাউদ ১/২০৭)
হাদীসের ব্যাখ্যাকারগণের কেউ কেউ উক্ত হাদীসে ‘ভুলে যাওয়া’ শব্দের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, এই শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য যে কুরআন মজীদ হিফয করার পর অবহেলা ও ত্রুটির কারণে দেখে দেখে তেলাওয়াত করার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছে। তবে কোনো কোনো মুহাক্কিক আলেম ‘ভুলে যাওয়া’-এর ব্যাখ্যা করেছেন মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলা। অর্থাৎ যে কুরআন মজীদ হিফয করার পর না দেখে মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে তার ব্যাপারে উক্ত শাস্তি প্রযোজ্য হবে। উল্লেখ্য যে, এটি খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দাকে তাঁর পবিত্র কালাম কুরআন মজীদ হিফয করার মতো বিরাট নেয়ামত দান করলেন আর সে তার অবহেলা ও ত্রুটির দরুণ তা ভুলে গেলে। এটি তাঁর এই মহান নেআমতের প্রতি অকৃতজ্ঞতার পরিচয়। তাই এখন তার কর্তব্য হল, প্রতিদিন কিছু সময় হলেও নিয়মিত তেলাওয়াত করে যাওয়া এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করা।
সুনানে আবু দাউদ ১/২০৭, ১/৬৬; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৮৫; মিরকাতুল মাফাতীহ ৫/৯; আওনুল মা’বুদ ৪/২৪১; বাযলুল মাজহুদ ৩/৩০২, ৭/৩১৪; মাজমাউয যাওয়াইদ ৭/৩৪৬; মালফূযাতে হাকীমুল উম্মত ২৩/২০১
আমার ভাই এক মহিলার দুধপান করেছে। ঐ ভাইয়ের বিবাহের বয়স...
আমার ভাই এক মহিলার দুধপান করেছে। ঐ ভাইয়ের বিবাহের বয়স হয়েছে। ভাইয়ের দুধ মা নিজ ননদের সাথে (অর্থাৎ ভাইয়ের দুধ সম্পর্কীয় ফুফু) ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। দুধ সম্পর্কীয় ফুফুর সাথে বিবাহ সহীহ হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
দুধ মাতার ননদের সাথে ঐ ছেলের বিবাহ বৈধ নয়। কেনন ঐ ননদ ছেলেটির দুধ সম্পর্কীয় ফুফু। আর রক্তের (বংশীয়) সম্পর্কের ফুফুর সাথে যেমনিভাবে বিবাহ হারাম তদ্রূপ দুধ সম্পর্কের ফুফুর সাথেও বিবাহ হারাম।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩, ৯৪
নাঈম আমার খালাতো ভাই। আমার আম্মু অসুস্থ থাকার কারণে ছোটকালে...
নাঈম আমার খালাতো ভাই। আমার আম্মু অসুস্থ থাকার কারণে ছোটকালে দীর্ঘদিন আমি এই খালার দুধ পান করেছি। এখন নাঈম আমার আপন ছোট বোনকে বিয়ে করতে চায়। তার জন্য কি আমার ছোট বোনকে বিয়ে করা বৈধ হবে?
হ্যাঁ, নাঈমের জন্য আপনার ছোট বোনকে বিবাহ করা জায়েয। কেননা আপনি নাঈমের মায়ের দুধ পান করার কারণে আপনার বোনের সাথে নাঈমের দুধ সম্পর্ক হয়নি।
-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭
কিছুদিন পূর্বে আমার বন্ধু শাকেরের বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। খাবারের...
কিছুদিন পূর্বে আমার বন্ধু শাকেরের বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। খাবারের পর বিবাহ পড়ানো হবে। তাই উভয় পক্ষের সকলেই উপস্থিত হল। মেয়ে পক্ষের ওকিল অর্থাৎ মেয়ের বাবা কাযী সাহেবকে বিবাহ পড়ানোর সম্পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। অতপর কাযী সাহেব কনের পক্ষ থেকে বরের (শাকের) নিকট প্রস্তাব রাখলেন, কিন্তু বর শাকের মহরের পরিমাণে নারাজ হয়ে কিছু না বলে চুপ করে থাকে। এরপর আমি এবং তার পিতা তাকে দূরে নিয়ে এসে বুঝালাম। এতে সে শান্ত হয় এবং কবুল করতে সম্মতি দেয়। অতপর আমরা এসে দেখি, কাযী সাহেব চলে গেছেন। আমরা মেয়ের পিতাকে বললে তিনি বলেন, আজকে নয়, বিয়ে পরে হবে। কিন্তু বর (শাকের) ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার সামনে বলেছে, আমি কবুল করিলাম।
আমি জানতে চাই, উল্লেখিত অবস্থায় শাকেরের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি? যদি না হয়ে থাকে তাহলে সহীহভাবে বিবাহ হওয়ার পদ্ধতি কী? জানালে উপকৃত হব।
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী এ বিবাহ সহীহ হয়নি। কারণ বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য প্রস্তাব এবং গ্রহণ একই মজলিসে হওয়া জরুরি। এক পক্ষের প্রস্তাবের পর অপর পক্ষ সম্মতিদানের পূর্বে মজলিস ছেড়ে চলে গেলে ঐ প্রস্তাব বাতিল বলে গণ্য হয়। তাই এরপর পূর্বোক্ত প্রস্তাবের ভিত্তিতে কবুল বললে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
এখন যদি উভয় পক্ষ বিবাহ করতে সম্মত হয় তাহলে মোহর নির্ধারণ করে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে ইজাব-কবুল করে নিতে হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৯
আমি শুনেছি যে, ছেলে আর মেয়ে শুধু তারা দু’জনে এক...
আমি শুনেছি যে, ছেলে আর মেয়ে শুধু তারা দু’জনে এক হয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিবাহ করলে তা জায়েয হবে। কথাটি কতটুকু সত্যি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
না, এভাবে বিবাহ সংঘটিত হবে না। বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার জন্য অন্তত দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার উপস্থিতিতে তাদেরকে শুনিয়ে ইজাব কবুল হওয়া আবশ্যক। অন্যথায় বিবাহ শুদ্ধ হবে না।
-ইলাউস সুনান ১১/১৭; জামে তিরমিযী ১/২১০; ফাতহুল কাদীর ৩/১১০; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১
আমার মামা তার সৎ খালাকে বিবাহ করেছে। আমার নিজের নানী...
আমার মামা তার সৎ খালাকে বিবাহ করেছে। আমার নিজের নানী অর্থাৎ মামার আপন মা মারা যাওয়ার পর, নানা আরেকটি বিবাহ করেন এবং সেই নানীর আপন ছোট বোনকে মামা বিবাহ করেন। উল্লেখ্য, সে নানা মারা যাওয়ার পর তারা বিবাহ করে। এখন আমি জানতে চাচ্ছি যে, তাদের এই বিবাহ শরীয়তসম্মত হয়েছে কি না? তাদের ঘরে দুটি সন্তান হয়েছে। তাদের বিবাহ যদি শরীয়তসম্মত না হয় তবে ক) তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রাখা যাবে কি না? খ) তাদের ভুল হয়েছে বলে তাদের জানানোর পরও যদি তারা বিবাহ বিচ্ছেদ না করে তবে তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করব কি না? গ) তাদের বিবাহ নাজায়েয হলে তাদের সঙ্গে কিভাবে এটা উপস্থাপন করব। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন এবং এই অবস্থায় তারা ইবাদত-বন্দেগী করলে তা কবুল হবে কি? তাদের সন্তানদের বয়স ১০ ও ৪ বছর। এদের সৎভাবে চলতে আমাদের করণীয় কী?
সৎ মায়ের বোন মাহরাম নয়। তাকে বিবাহ করা জায়েযের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ফতোয়ার কিতাবে লেখা রয়েছে। তাই আপনার মামার জন্য সৎ মার বোনকে বিবাহ করা জায়েয হয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে আপনার আত্মীয় ও পার্শ্ববর্তী লোকদের মধ্যে যারা এই মাসআলা নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছে তাদেরকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া আপনাদের কর্তব্য। যাতে এ নিয়ে কোনো প্রকার ঝামেলার সৃষ্টি না হয়।
বি. দ্র. : আপনি বিশেষ প্রশ্ন শিরোনামে একটি প্রশ্ন করেছেন। এটির উত্তর বিশ্লেষণ সাপেক্ষ। স্বল্প পরিসরে তা দেওয়া সম্ভব নয়। এ সম্পর্কে বিভিন্ন কিতাব পাওয়া যায়। সম্ভব হলে সেগুলো দেখতে পারেন। আলকাউসারে এ ব্যাপারে কোনো এক সময় লেখা আসবে ইনশাআল্লাহ। আর বিশেষ প্রয়োজনে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন।
-সূর নিসা ২৪; আহকামুল কুরআন জাসসাস ২/১৩৯; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১; ইমদাদুল আহকাম ২/২৪৭
দুধ সম্পর্কীয় ভাইয়ের বোনকে বিবাহ করা ৷
-আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
বিয়ে শাদী কি তাকদীরের ফায়সালা?
করেছেন,
ﻭَﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟًﺎ [ ٧٨ : ٨
আমি তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি, {সূরা নাবা-৮}
কিন্তু বান্দা যেহেতু জানে না। তাই বান্দা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবাং যাচাই বাছাই করবে ভাল পাত্র-পাত্রী দেখে বিবাহ করতে।
উল্লেখ্য যে, এগুলো তাকদীরের বিষয় ৷ এসব বিষয়ে আলোচনা ও চিন্তা ফিকির করতে রাসূল সাঃ নিষেধ করেছেন। তাই আলোচনা ও চিন্তা ফিকির থেকে বিরত থাকা উচিত ৷
-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৪; মেরকাত শরহে মেশকাত ১/২৫৬৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
কুরআন মাজীদ হিফয করে ভুলে যাওয়া ৷
সুনানে আবু দাউদ ১/২০৭৷
কোনো কোনো ব্যাখ্যাকার উক্ত হাদীসে ‘ভুলে যাওয়া’
শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, এই শাস্তি ঐ ব্যক্তির জন্য যে কুরআন মজীদ হিফয করার পর নিজ অবহেলা ও ভুলের কারণে দেখে দেখে তেলাওয়াত করার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছে। আর কোনো কোনো
মুহাক্কিক ব্যাখ্যাকার ‘ভুলে যাওয়া’-এর ব্যাখ্যা করেছেন মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলা। অর্থাৎ যে কুরআন মজীদ মুখস্ত করার পর আর মুখস্ত রাখতে পারল না, মুখস্ত পড়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে তার ব্যাপারে উক্ত শাস্তি প্রযোজ্য হবে।
অতএব এটি খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, আল্লাহ তাআলাযকোনো বান্দাকে তাঁর পবিত্র কালাম কুরআন মজীদ হিফয করার মতো বিরাট নেয়ামত দান করলেন আর সে তার অবহেলা ও ত্রুটির দরুণ তা ভুলে গেলে। এটি তাঁর এই মহান নেআমতের প্রতি অকৃতজ্ঞতার পরিচয়। তাই এখন তার কর্তব্য হল, প্রতিদিন কিছু সময় হলেও নিয়মিত তেলাওয়াত করে যাওয়া এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করা।
সুনানে আবু দাউদ ১/২০৭, ১/৬৬; মিরকাতুল মাফাতীহ ৫/৯;বাযলুল মাজহুদ ৩/৩০২, মালফূযাতে হাকীমুল উম্মত ২৩/২০১৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
দুধ মাতার ননদের সঙ্গে বিবাহ৷
৯৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
বিয়ের প্রস্তাবের পর ভিন্ন মজলিসে সম্মতি দেওয়া৷
না।
এখন যদি উভয় পক্ষ বিবাহ করতে সম্মত হয় তাহলে মোহর নির্ধারণ করে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে ইজাব- কবুল করে নিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৯৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
দুধবোনের বোনকে বিবাহ করা৷
হবে?
হয়নি।
-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
নওশীনের মা ও মাহরোস আহসানের মা সহোদর বোন। নওশীনের বয়স...
কালে তার মা অসুস্থ হওয়াতে তার খালার (মাহরোস আহসানের মায়ের) দুধ পান করে। আমাদের জানামতে নওশীন ও মাহরোস আহসানের মধ্যে বিবাহ বৈধ নয়। জানার বিষয় হল , মাহরোস আহসানের সাথে নওশীনের ছোট বোন নোভার বিবাহ হতে পারবে কি না? নোভা তো মাহরোস আহসানের মার দুধ পান করেনি। মাহরোস আহসান ও নোভার মধ্যে বিয়ে হওয়া জায়েয ও নাজায়েয নিয়ে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে বিধায় বিষয়টি বিস্তারিতভাবে দলীলাদি দিয়ে সমাধান দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
তারা একে অন্যের দুধ সম্পর্কের মাহরাম নয়।
বোন দুধ পান করার কারণে নোভার সাথে দুধ
সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন সৃষ্টি হয়নি।
সুতরাং মাহরোস আহসানের সাথে নোভার বিবাহ জায়েয হবে। বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; আল মাবসূত ইমাম সারাখসী ৫/১৩৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
এক মেয়ে ও এক ছেলের মাঝে সম্পর্ক ছিল। মা জানতে...
মেয়েকে বিবাহ দিয়েছে। জানার বিষয় হল,বাবা জীবিত থাকা সত্ত্বেও বাবার অনুমতি ছাড়া এই বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে কি না?
করা।
আলবাহরুর রায়েক ৩/১০৯; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৩/১৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী
৪/৫৬
আমি কি আমার পিতার আপন মামাতো বোনকে বিবাহ করতে পারব?...
থাকব।
২/৫৩১
গত এক মাস আগে আমার এক আত্মীয়ের বিবাহ হয়। তারা...
বলে?
৫/৩৪৩
আমার খালাতো বোনের সাথে আমার বিয়ের কথাবার্তা বিগত এক বছর...
কারীমার ৫ ছেলে। ফাতেমার ২ মেয়ে ও ১ ছেলে। ফাতেমার...
কারীমার দুধ পান করেছে। এখন জানার বিষয় হল, কারীমার বড় ছেলের সাথে বুশরার বিবাহ শুদ্ধ হবে কি না? আর ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফার সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ বৈধ হবে কি না?
মেয়ে বুশরা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেছে তাই কারীমা তার দুধ মা হয়ে গেছে। তার সকল ছেলে বুশরার দুধ ভাই ও মাহরাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ
করেছেন-
ﺣُﺮِّﻣَﺖْ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺃُﻣَّﻬَﺎﺗُﻜُﻢْ ... ﻭَﺃَﺧَﻮَﺍﺗُﻜُﻢْ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﺮَّﺿَﺎﻋَﺔِ (তরজমা) তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা ... তোমাদের দুধ বোন। -সূরা নিসা ৪ : ২৩ উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বর্ণনা করেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, দুধ পানের দ্বারা ঐ সব সম্পর্ক হারাম হয়ে যায়,যা বংশের কারণে হারাম হয়। -সহীহ মুসলিম
১/৪৬৬
সুতরাং ফাতেমার বড় মেয়ের সাথে কারীমার কোনো ছেলের বিবাহ জায়েয হবে
না।
তবে ফাতেমার ছোট মেয়ে শরীফা যেহেতু কারীমার দুধ পান করেনি তাই কারীমার ছেলেরা তার মাহরাম নয়। তাই কারীমার যে কোনো ছেলের সাথে তার বিবাহ বৈধ। -সূরা নিসা ৪ : ২৩;তাফসীরে কুরতুবী ৫/৭৪;তাফসীরে রাযী ১০/৩০;সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬;মুসনাদে আহমদ,হাদীস : ২৪১২;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া
৪/৩৬৫;
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য সর্বনিম্ন মহর কত? আর মহরে ফাতেমী...
টাকা।
-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৪/৩৯৮
কিছুদিন পূর্বে আমার বন্ধু শাকেরের বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। খাবারের...
মেয়ের
বাবা কাযী সাহেবকে বিবাহ পড়ানোর সম্পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। অতপর কাযী সাহেব কনের পক্ষ থেকে বরের (শাকের) নিকট প্রস্তাব রাখলেন, কিন্তু বর শাকের মহরের পরিমাণে নারাজ হয়ে কিছু না বলে চুপ করে থাকে। এরপর আমি এবং তার পিতা তাকে দূরে নিয়ে এসে বুঝালাম। এতে সে শান্ত হয় এবং কবুল করতে সম্মতি দেয়। অতপর আমরা এসে দেখি, কাযী সাহেব চলে গেছেন। আমরা মেয়ের পিতাকে বললে তিনি বলেন, আজকে নয়, বিয়ে পরে হবে। কিন্তু বর (শাকের) ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার সামনে বলেছে, আমি কবুল করিলাম। আমি জানতে চাই, উল্লেখিত অবস্থায় শাকেরের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি? যদি না হয়ে থাকে তাহলে সহীহভাবে বিবাহ হওয়ার পদ্ধতি কী? জানালে উপকৃত হব।
হবে না।
এখন যদি উভয় পক্ষ বিবাহ করতে সম্মত হয় তাহলে মোহর নির্ধারণ করে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে ইজাব- কবুল করে নিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৯
এক ছেলে এবং এক মেয়ে কাজি অফিসে গিয়ে কাবিননামায় স্বাক্ষর...
কারণ কী?
হয়েছে।
এখন যদি তারা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তাহলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মৌখিক ইজাব-কবুলের মাধ্যমে বিবাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের মাঝে বিবাহের জন্য ইদ্দত পালন করা লাগবে না। বরং যে কোনো মুহূর্তে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। -দুরারুল হুককাম ফী শরহি গুরারিল আহকাম ১/৩২৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭০, ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ৩/১০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪৮৫