ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৬৫২
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়:

পিতা মাতা দাড়ি কেটে ফেলার আদেশ করলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আপনাদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে পারি একমুঠ এর কম দাড়ি ছাটা কবিরা গুনাহ । কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ের কারণে পরিবার হতে দাড়ি ছাটার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে ।দাড়ি ছাটতে না চাইলে অপদস্থ হতে হচ্ছে । সাম্প্রতিক এক আত্মীয়কে সম্ভবত দাড়ি দেখে পুলিশ হাজতে নিয়েছে। এছাড়া এলাকাতে কিছু মানুষ কে গ্রেফতার করা হচ্ছে ইত্যাদি… এতকিছু দেখে আব্বা-আম্মা দাড়ি ছাটতে বলেছেন। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে দাড়ি না ছাটা পর্যন্ত বিবাদ বন্ধ হবে না মনে হয় । এখন কি করতে পারি ?
উত্তর
আমাদের দেখা মতে যারা দাড়ি ছেটে ফেলে তাদেরকেই পুলিশ ধরছে জামাত ও শিবির সন্দেহে। কারণ এক মুষ্টি দাড়ি সাধারণত জামাত ও শিবিরের লোকেরা রাখে না। তারা দাড়িকে ছেটে ছোট করে রাখে। তাই বাস্তবতার দৃষ্টিতেও আপনার দাড়ি ছেটে ফেলার দাবীটি অযৌক্তিক বলেই প্রতীয়মান হয়। আরেকটি বিষয় কমপক্ষে এক মুষ্টি দাড়ি রাখা এটি ইসলামের একটি প্রতীক। মুসলমানিত্বের প্রতীক। এটি রাসূল সাঃ সহ সমস্ত সাহাবী ও উম্মতে মুসলিমার আমল। এটি রাখা ওয়াজিব।
‎ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ : ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ
‎‏( ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﻓﺮﻭﺍﺍﻟﻠﺤﻰ ﻭﺃﺣﻔﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ .
‎ﻭﻛﺎﻥ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺇﺫﺍ ﺣﺞ ﺃﻭ ﺍﻋﺘﻤﺮ ﻗﺒﺾ ﻋﻠﻰ ﻟﺤﻴﺘﻪ
‎ﻓﻤﺎ ﻓﻀﻞ ﺃﺧﺬﻩ হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর। আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩ আর দ্বীনে শরীয়তের বিধান পালন করার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার শরীয়ত বিরোধী কথা মানা জায়েজ নয়। হাদীসে পরিস্কার ভাষায় এসেছে-
‎ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ” ﻟَﺎ
‎ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﺒَﺸَﺮٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠﻪِ হযরত আলী রাঃ থেকে বর্নিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নাফরমানীর করে কোন মানুষের আনুগত্ব করা জায়েজ নয়। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১০৬৫ সুতরাং আপনার পিতা-মাতা যতই অসন্তুষ্ট হোন না কেন, এক্ষেত্রে তাদের কথা আপনার জন্য জায়েজ হবে না। দাড়ি রাখতে হবে। আপনার পিতামাতাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন। দ্বীনের সমঝ মনে হয় খুবই কম আপনার পিতা-মাতার। তাদেরকে দ্বীনদার বানানোর জন্য চেষ্টা ফিকির করুন। বেশি বেশি করে দুআ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতের সকল বিপদ আপদ থেকে হিফাযত করুন। আমীন। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ হজ্ব