ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৬২০
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়:

ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াতের ব্যবহার৷

প্রশ্ন
গানের ব্যবহার যেহেতু নাজায়েয তাই অনেকেই এক্ষেত্রে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ডাউনলোড করে থাকে। ধারণা করা হয় যে, এতে গুনাহ তো হবেই না, বরং আমার সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষমান ব্যক্তি কিছু সময় হলেও কুরআনের তিলাওয়াত শুনছে। তাই এটাকে ভাল মনে করা হয়। আযানের শব্দ বা জিকর শুনছে। এতে শ্রোতাকে সওয়াবের বিষয় শোনানো হচ্ছে। এদৃষ্টিতে একে অনেকেই ভাল বলে। জানতে চাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন, জিকির, আযানের ব্যবহারের হুকুম
কী?
উত্তর
নিঃসন্দেহে প্রশ্নোক্ত উদ্দেশ্যেটি ভালো।
রিংটোন, মিউজিক বা গান না শুনিয়ে সেস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত বা জিকর, আযান ইত্যাদি শোনানোর ব্যবস্থা করা অবশ্যই একটি প্রশংসণীয় কাজ। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এটি ভাল মনে হলেও এক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারে একাধিক খারাপ দিক রয়েছে। যার একটিই এ থেকে বিরত থাকার জন্য যথেষ্ট। যেমন- (১) ওয়েলকাম টিউন-এর ব্যবহার হয় যার কাছে কল করা হয়েছে তার সাথে সংযোগ সৃষ্টি হয়েছে কি না এটি বুঝার জন্যই। কারো কাছে কল করার পর রিংটোন পেলে বুঝা যায় যে, তার মোবাইলে রিং হচ্ছে। কল করার পর বিজিটোন আসলে বুঝা যায় সে এখনও অন্যের সাথে কথা বলছে। আবার ফোন বন্ধ থাকলেও এক ধরনের টোন পাওয়া যায়। মোটকথা কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ লাগার জন্য যে সংকেত-টোন রয়েছে সেস্থানে কুরআনের তিলাওয়াত, আযান ইত্যাদি ফিট করলে এই তিলাওয়াত ও আযানও ফোনকারীকে প্রথমে ঐ টোনের কাজ দিবে। অর্থাৎ ফোনকারী বুঝবে যে, কাঙ্ক্ষিত ফোনটিতে সংযোগ পেয়েছে, রিং হচ্ছে। আচ্ছা, বলুন তো আল্লাহর মহান কালাম কি এই কাজে ব্যবহার করা উচিত? এই কাজে তিলাওয়াতের ব্যবহার কি অপাত্রে কুরআনের ব্যবহার নয়? আযান যা শরীয়তের একটি মহান নিদর্শন ও জিকর, একে এই কাজে ব্যবহার করা কি সমীচীন? (২) কাঙ্ক্ষিত নাম্বারে কল করার পর রিংটোন হিসাবে ফোনকারীর কানে কুরআনের তিলাওয়াত ভেসে আসছে, হয়ত রিসিভের অপেক্ষার সাথে সাথে তিলাওয়াতও শুনছে। কিন্তু যার নাম্বারে ফোন করা হয়েছে সে তো তিলাওয়াত শুনতে পাচ্ছে না। বিধায় সে এমন সময় রিসিভ করল যখন তিলাওয়াতের কোন শব্দের মাঝে কিংবা এমন স্থানে রিসিভ করা হল যখন থেমে গেলে আয়াতের অর্থই বদলে যায়। তদ্রূপ আযান ডাউনলোড করলে কেউ যদি ‘লা-ইলাহা’ পর্যন্ত উচ্চারিত হওয়ার পর ফোন রিসিভ করে ফেলে তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- ‘কোন মাবুদ নেই।’ ফলে অর্থের বিকৃতি ঘটে। এই সমস্যার কারণেও এস্থানে এগুলোর ব্যবহার করা যাবে না। (৩) এছাড়া বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যে থেকে ফোনে কথা বলার সময় কানে তিলাওয়াতের ধ্বনি আসলেও তা মনোযোগ সহকারে শোনা হয় না। ফলে তিলাওয়াত শোনার হক আদায় হয় না। তাই ওয়েলকাম টিউন হিসাবে কুরআন- তিলাওয়াত বা আযান কিংবা যিকরের ব্যবহার করা যাবে না। এর জন্য স্বাভাবিক রিংটোনই উপযোগী। -আত-তিবয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন- নববী ৪৬, হককুত্তিলাওয়া-হুসাইনী শাইখ উসমান-৪০১, আলমগীরী ৫/৩১৫, রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ ফেইসবুক-মোবাইল