ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৫২৯
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়:

তাবলীগের ছয় উসুল পুর্নদ্বীন কিনা!

প্রশ্ন
তাবলীগ জামাত বিরোধী অনেক ভাই প্রায়ই একটি অভিযোগ করে থাকেন যে, তাবলীগ জামাআতের ছয় উসুলে পূর্ণ ইসলাম নেই। তাই এ মেহনত করা জায়েজ নয়।
উত্তর
এ অভিযোগটি একটি অজ্ঞতার পরিচয়বাহী ও হিংসাত্মক অভিযোগ। যার কোন ভিত্তি নেই। তাবলীগের ছয় উসুলের মাঝে পূর্ণ ইসলাম আছে একথা কোন তাবলীগী ভাই বলেন নাকি? তারাতো সর্বদা একথার দাওয়াত দেন যে, ছয় উসূলের উপর চললে পূর্ণ দ্বীনের উপর চলা সহজ হয়। একথা কোন তাবলীগী ভাই বলেন না যে ছয় উসূলই পূর্ণ দ্বীন। সাথে সাথে তাবলীগ তথা দ্বীনের দাওয়াত শুধু একথার উপর দেয়া হয় না যে, শুধুমাত্র ছয় উসূল মানতে হবে, বরং দাওয়াত দেয়া হয় পূর্ণ শরীয়তের পাবন্দ হতে হবে। তাই নয় কি? সুতরাং এ দাবি করা যে, যেহেতু ছয় উসূলে পূর্ণ দ্বীন নেই, তাই তাবলীগী ভাইয়েরা অপূর্ণাঙ্গ দ্বীনের দিকে আহবান করে। কারণ ছয় উসুলের দাওয়াতের মাধ্যমে পূর্ণ দ্বীনের দিকেই আহবান
করা হয়।
যেমনটি আল্লাহ তায়ালা ছয়টি বিষয়ের অনুসরণ করলে বান্দা সফলকাম হয়ে যাবে মর্মে সূরায়ে মু’মিনূন এ ঘোষণা করেন-
‎ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻠَﺢَ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨُﻮﻥَ ‏( 1 ‏) ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻓِﻲ ﺻَﻼﺗِﻬِﻢْ
‎ﺧَﺎﺷِﻌُﻮﻥَ ‏( 2 ‏) ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ ‏( 3 ‏)
‎ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻟِﻠﺰَّﻛَﺎﺓِ ﻓَﺎﻋِﻠُﻮﻥَ ‏( 4 ‏) ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻟِﻔُﺮُﻭﺟِﻬِﻢْ
‎ﺣَﺎﻓِﻈُﻮﻥَ ‏( 5 ‏) ﺍﻟﻰ ﺍﺧﺮ - ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻷَﻣَﺎﻧَﺎﺗِﻬِﻢْ ﻭَﻋَﻬْﺪِﻫِﻢْ
‎ﺭَﺍﻋُﻮﻥَ ‏( 8 ‏) ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺻَﻠَﻮَﺍﺗِﻬِﻢْ ﻳُﺤَﺎﻓِﻈُﻮﻥَ ‏( 9 ‏)
‎ﺃُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻮَﺍﺭِﺛُﻮﻥَ ‏( 10 ‏) ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺮِﺛُﻮﻥَ ﺍﻟْﻔِﺮْﺩَﻭْﺱَ ﻫُﻢْ
‎ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ ‏( 11 ) ১-নিশ্চয় সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ। ২-যারা তাদের নামাযে আন্তরিকভাবে বিনীত। ৩-যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে। ৪- যারা যাকাত সম্পাদনকারী। ৫-যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। ৮- এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। ৯-এবং যারা নিজেদের নামাযের পরিপূর্ণ রক্ষাবেক্ষণ করে। ১০ এরাই হল সেই ওয়ারিশ। ১১-যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তারাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে। {সূরা মুমিনুন-১-১১} এ আয়াতে সমূহে লক্ষ করুন-ছয়টি কাজ করলে আল্লাহ তায়ালা সফলকাম হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সেই সাথে জান্নাতী হওয়ার ঘোষণেও দিয়েছেন। অথচ এ ছয় কাজে রোযার কথা নেই। নেই হজ্বের কথাও। তাহলে কি আল্লাহর বলা সফলকাম হওয়ার জন্য রোযা রাখার প্রয়োজন নেই? নেই হজ্ব ফরজ হলে হজ্ব আদায়েরও। এ দু’টি গুরত্বপূর্ণ ফরজ ছাড়াই কি ব্যক্তি জান্নাতী হয়ে যেতে পারে?
কিভাবে?
এর জবাব যেমন-এ ছয়টির মাঝেই পূর্ণ দ্বীন শামিল। তেমনি তাবলীগের ছয় উসূলের দাওয়াতের দ্বারাও পূর্ণ দ্বীনের উপর আমলের দিকেই আহবান করা হয়। যা কিছুতেই দ্বীনকে সীমাবদ্ধ করা নয়, যেমন আল্লাহ তায়ালা সীমাবদ্ধ করেন নি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ জাকাত