ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৩২৭২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়:

ক) মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা কি জরুরি? না মনে...

প্রশ্ন
ক) মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা কি জরুরি? না মনে মনে করলেই হবে?
খ) সম্মিলিত মুনাজাত করার বিধান কী? গ) জায়নামাযের দুআ পড়া যাবে কি?
উত্তর
ক) কোনো কাজের ব্যাপারে অন্তরের দৃঢ় ইচ্ছাকেই নিয়ত
বলে। সুতরাং নামায-রোযা এবং অন্যান্য আমলের ক্ষেত্রে অন্তরের সংকল্পই নিয়ত হিসেবে যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করে বলা জরুরি নয়। তবে অন্তরের নিয়তের সাথে
সাথে মুখেও উচ্চারণ করে
বলতে নিষেধ নেই। কেউ যদি ইচ্ছার দৃঢ়তার জন্য মুখেও উচ্চারণ করে নেয় তবে তা দোষণীয়
হবে না।
-উমদাতুল কারী ১/৩৩; শরহুল মুনইয়া ২৫৪; আদ্দুররুল মুখতার
১/৪১৫
খ) দুআ অনেক বড় ইবাদত। হাদীস শরীফে এসেছে, দুআই ইবাদত। এই দুআ যেমন একা করা যায় তেমনি সম্মিলিতভাবেও করা যায়। সম্মিলিত দুআ সংক্রান্ত এক দুটি দলিল নিম্নে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল-
১. কুরআন মাজীদে ইরশাদ
হয়েছে, (তরজমা) তোমাদের দুজনের দুআ কবুল করা হয়েছে।
-সূরা ইউনুস : ৮৯
এ আয়াতে তোমাদের দুইজনের দুআ বলতে মুসা আ. ও হারূন আ.-এর দুআ বুঝানো হয়েছে। একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ী ইমামের সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত মুসা আ. দুআ করেছেন এবং হারূন আ. আমীন বলেছেন। একেই আল্লাহ তাআলা দুজনের দুআ বলেছেন।
-তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৬৬৫; আদ্দুররুল মানসূর ৩/৩৪১
তো এটা তাদের দুজনের সম্মিলিত দুআ ছিল, যা আল্লাহ তাআলা কবুল করেছেন এবং খোশখবরি শুনিয়েছেন যে, তোমাদের
দুজনের দুআ কবুল করা হয়েছে। ২. একটি দীর্ঘ হাদীসে
সাহাবীয়ে রাসূল হযরত হাবীব ইবনে মাসলামা আল ফিহরী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, কিছু মানুষ যখন
কোথাও একত্র হয়ে এভাবে দুআ করে যে, একজন দুআ করে এবং অন্যরা আমীন বলে
সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের দুআ কবুল করেন। -মুজামে কাবীর তবারানী ৪/২৬; মুসতাদরাকে হাকেম ৩/৩৪৯
সম্মিলিত দুআ বিষয়ে আরো জানতে মাসিক আলকাউসার, শাবান-
রমযান ১৪২৯; আগস্ট ২০০৮ সংখ্যায় হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব লিখিত ‘সম্মিলিত দুআ : একটি প্রশ্নের উত্তর’’ প্রবন্ধটি পাঠ
করুন।
গ) জায়নামাযের কোনো দুআ নেই। কোনো কোনো
মহলে ইন্নি ওয়াজ্জাহতু দুআটি জায়নামাযের দুআ নামে পরিচিত। কিন্তু এটি ঠিক নয়। এটি জায়নামাযের দুআ নয়; বরং হাদীস শরীফ নামায শুরু করার পর ছানা হিসেবে এ দুআ পড়ার কথা আছে।
'-সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭১; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৭৬০; রদ্দুল মুহতার
১/৪৮৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/১৫১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ আজান-নামাজ